ছেলের পর চলে গেলেন অগ্নিদগ্ধ বাবাও

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতেই মারা যায় আট বছরের শিশু জুবায়ের (মাঝে)। এর প্রায় ১৯ ঘন্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিশুর বাবা মকবুল হোসেন (বাঁয়ে)। আরেক শিশুপুত্র আরিফ (ডানে) দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে শিশু মো. জুবায়ের হোসেনের (৮) মৃত্যুর প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর তার বাবা অগ্নিদগ্ধ মকবুল মিয়াও (৪২) মারা গেছেন। আজ বুধবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আরও পড়ুন

মকবুল উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের সফর মিয়ার ছেলে। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আশুগঞ্জ বাজারের শরীয়তনগর এলাকার আলাই মোল্লা ভবনের নিচতলায় ওই অগ্নি–দুর্ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনাস্থলেই দগ্ধ শিশু জুবায়ের মারা যায়।

মকবুলের স্ত্রী রেখা ও আরেক ছেলে আরিফের অবস্থাও ভালো না। রেখার শরীরের ৪০ শতাংশ এবং আরিফের শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

একই অগ্নিকাণ্ডে জুবায়েরের মা (মকবুলের স্ত্রী) রেখা বেগম (৩৫), জুবায়েরের বড় ভাই (মকবুলের আরেক ছেলে) আরিফ হোসেন ওরফে জয় এবং ভবনের বাসিন্দা জামিয়া রহমান অগ্নিদগ্ধ হন। তাঁদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়।

নিহত মকবুলের চাচা মোমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মকবুলের শরীরের ৬২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। রেখার শরীরের ৪০ শতাংশ এবং আরিফের শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। মকবুলের স্ত্রী ও ছেলের অবস্থাও ভালো না।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, মকবুলের পরিবার আশুগঞ্জ বাজারের কোহিনুর সিনেমা হল রোড এলাকার মোহাম্মদ আলাই মোল্লা ভবনের নিচতলায় থাকে। মকবুল বাসায় রাতের খাবার খেতে বসেছিলেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে মকবুলের বড় ছেলে আরিফ মশার কয়েল ধরানোর জন্য দেশলাই দিয়ে আগুন জ্বালায়। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে যায়। মুহূর্তেই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসী, পুলিশ এবং আশুগঞ্জ, সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের চারটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে শিশু জুবায়েরের মৃত্যু হয়। পরে দগ্ধ অবস্থায় মকবুল, রেখা, আরিফ ও ভবনের বাসিন্দা জামিয়াকে উদ্ধার করে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।