বিশ্ববিদ্যালয় ‘ক্যাম্পাসে থাকতে হলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে হবে’, এমন শর্তে রাজি না হওয়ায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর হলে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই শিক্ষার্থীকে আজ সোমবার ভোরে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে দুপুরে বমি শুরু হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম ওয়ালিদ নিহাদ। তিনি লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধান জানিয়েছেন, ওয়ালিদের চিকিৎসার বিষয়ে এ মুহূর্তে জোর দিচ্ছেন তাঁরা। পরে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওয়ালিদ নিহাদ আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশের এলাকায় একটি মেসে থাকেন তিনি। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একটি কক্ষে যান তিনি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সে কক্ষ থেকে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাঁকে ৩২৪ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান।
ওয়ালিদ নিহাদ বলেন, ‘সেখানে যাওয়ার পর আমাকে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে হবে এবং ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসানের অনুসারী হয়ে চলতে হবে। এ কথায় রাজি না হওয়ায় আমাকে চড়থাপ্পড়, ঘুষি মারা হয়। মারধরে অন্তত ১৫ জন অংশ নেন। এরপর আমার হাতে একটি রামদা এনে দিয়ে বলা হয়, এটি হাতে নিয়ে হাসিমুখে ছবি তুলতে। আমাকে বলতে বলা হয়, ২০২৩ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের কর্মীদের এ ক্যাম্পাসে থাকতে দেওয়া হবে না।’
অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি কিছুক্ষণ আগে জেনেছেন তিনি। এতে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাঁর কোনো কর্মী এমন কাজ করেননি।
নিজের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে ওয়ালিদ নিহাদ জানান, মারধরের পর সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করছেন তিনি। ঘাড়ে বেশি ব্যথা হচ্ছে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ভোরে বিষয়টি আমি জেনেছি। ওয়ালিদকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথমে ওয়ালিদের চিকিৎসাকে জোর দিচ্ছি। পরে তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বের করা হবে।’