চুয়াডাঙ্গায় দুই শিশুসহ তিনজন অগ্নিদগ্ধ
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কুশপুতুল দাহ করার সময় দুই শিশুসহ তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বেগমপুর ইউনিয়নের নেহালপুর স্কুলমাঠে শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘটনা ঘটেছে।
অগ্নিদগ্ধরা হলেন নেহালপুর গ্রামের রবগুল হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (৩০), একই গ্রামের হাসমত আলীর ছেলে ও নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রাফিক হোসেন (১০) এবং উজলপুর গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে নেহালপুর নাজাত উল উম্মাহ কওমি মাদ্রাসার ছাত্র মো. রহমতুল্লাহ (১১)। এদের মধ্যে রাফিক ও রহমতুল্লাহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। মিলন হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাতে সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
মিলন হোসেনের শরীরের ৫৫ থেকে ৫৬ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁর মাথা, মুখ ও পিঠের একাংশ ছাড়া সারা শরীর আগুনে ঝলসে গেছে।
সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট এহসানুল হক তন্ময় প্রথম আলোকে জানান, মিলন হোসেনের শরীরের ৫৫ থেকে ৫৬ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁর মাথা, মুখ ও পিঠের একাংশ ছাড়া সারা শরীর আগুনে ঝলসে গেছে।
শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ রাফিক ও রহমতুল্লাহকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায়। দুটি শিশুরই দুই পা আগুনে ঝলসে গেছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শামীম কবির প্রথম আলোকে জানান, অগ্নিদগ্ধ শিশু দুটিকে স্থানীয়ভাবেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা এখন শঙ্কামুক্ত।
বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আলি হোসেন জানান, ফ্রান্সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে অবমাননার প্রতিবাদে এবং দেশটির প্রেসিডেন্টের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বিকেলে নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে সাত থেকে আট শ মুসল্লি অংশ নেন। বিক্ষোভ শেষে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কুশপুতুল দাহ করার সময় অসাবধানতাবশত মিলন হোসেনের গায়ে আগুন ধরে যায়। তিনি ওই সময় দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকলে তাঁর গায়ের আগুন থেকে শিশু দুটি অগ্নিদগ্ধ হয়।
বেগমপুর ইউনিয়ন ইউপির চেয়ারম্যান আলি হোসেন বলেন, ‘অগ্নিদগ্ধ তিনজনকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেন। হাসপাতালে পৌঁছাতে রাত হয়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ তিনজনই হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য হওয়ায় আমি নিজে ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে তাঁদের চিকিৎসা দিচ্ছি।’
শিশু রাফিক হোসেন জানায়, ‘বাড়ির পাশের স্কুল মাঠে কয়েক শ মানুষের সমাবেশ দেখে কৌতূহলে সেখানে যাই এবং অগ্নিদগ্ধ হই।’ তবে মাদ্রাসাছাত্র রহমতুল্লাহর দাবি, নেহালপুর নাজাত উল উম্মাহ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক জাহিদ হাসানের নির্দেশে অন্তত ৩০ জন ছাত্র ওই সমাবেশে যোগ দিয়েছিল।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষক জাহিদ হাসানের মুঠোফোনে শনিবার সকালে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।