চার বছর আগের ভিডিও শেয়ার, ডিজিটাল আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ২
প্রায় চার বছর আগের ভিডিও নতুন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে বগুড়ার দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই ভিডিওতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বুলডোজার দিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা গুঁড়িয়ে দিতে দেখা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওটি ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর পরিচালিত অভিযানের।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম (২৪) এবং একই উপজেলার সেকেন্দারাবাদ পূর্বপাড়ার হাফিজার রহমানের ছেলে মাহবুর রহমান (২৩)। শরিফুল সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইংরেজি বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং মাহবুর বাঘোপাড়া শহীদ দানেজ উদ্দীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ইউনিট বগুড়া শহরের নিশিন্দারা কারবালা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া সাইবার অপরাধ ইউনিটের পরিদর্শক এমরান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, বগুড়া শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় শহরের সাতমাথায় পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে নিয়ে বগুড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ব্যাটারিচালিত ১৭টি রিকশা বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়। রিকশা ভেঙে ফেলার সময় চালকদের কান্না ও আহাজারির ভিডিও ওই সময় ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
বগুড়া সাইবার অপরাধ ইউনিটের পরিদর্শক এমরান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার দুই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
এদিকে ২০ জুন সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য টাস্কফোর্সের সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান। পুলিশের দাবি, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসার সুযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করতে শরিফুল ও মাহবুর নামে ওই দুই শিক্ষার্থী ২০১৭ সালের পুরোনো ভিডিও ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করেন।
এমরান মাহমুদ বলেন, গ্রেপ্তার শরিফুল একাই তিনটি ফেসবুক আইডি এবং তিনটি গ্রুপের অ্যাডমিন। গ্রেপ্তার দুজন স্বীকার করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা ছাড়াও তাঁরা পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানো এবং রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী নানা প্রচারণায় জড়িত। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক ফিরোজ হোসেন বাদী হয়ে দুজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিবির উপপরিদর্শক শওকত আলমকে।