চবি ছাত্রলীগের সঙ্গে স্থানীয়দের চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ, সড়ক অবরোধ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বেলা দেড়টায় ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। যা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। এতে দুই পক্ষের তিনজন আহত হয়েছেন।

প্রতক্ষ্যদর্শী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ বিজয়ের দুই কর্মী মোটরসাইকেল নিয়ে ২ নম্বর গেটে গিয়েছিলেন। তাঁরা ভাড়া বাসা খুঁজতে সেখানে যান। রাস্তার এক পাশে মোটরসাইকেলটি রাখা ছিল। একপর্যায়ে অটোরিকশার ধাক্কায় তাঁদের মোটরসাইকেলটি মাটিতে পড়ে সামনের অংশ ভেঙে যায়। এ নিয়ে অটোরিকশার যাত্রীর সঙ্গে দুই কর্মীর কথা-কাটাকাটি হয়। ঘটনা জানাজানি হলে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা ২ নম্বর গেটে এসে জড়ো হন। সেসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ শুরু হয়।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই স্থানীয় বাসিন্দারা বিজয়ের কর্মী মোহাম্মদ আকিব ও প্রমিত তালুকদারকে মারধর করেন। ঘটনাটি সমাধানের জন্য তাঁরা ২ নম্বর গেট এলাকায় গিয়েছিলেন কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েকজন নেতা-কর্মীর ওপর চড়াও হন। এরপর তাঁরা প্রতিহত করেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগার বিষয়টি ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী এসে সমাধান করে গিয়েছিলেন। পরে আবার অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা, রামদা নিয়ে স্থানীয় বাসা বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এমনকি নারীদেরও শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিয়েছেন। এতে স্থানীয় ব্যক্তিরা ভীত হয়ে আছেন।

এ দিকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাড়ি ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে এনে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের রেল গেট এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এরপর আগামীকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে বিজয়ের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দুই কর্মীকে অহেতুক মারধর করা হয়েছে। ঘটনা জানার জন্য নেতা-কর্মীরা ২ নম্বর গেট এলাকায় যান। সেখানে আরও পাঁচ কর্মীকে মারধর করেন স্থানীয় লোকজন। তাই উত্তেজিত হয়ে কয়েকজন কর্মী দুয়েকটা টিনের বেড়ায় ভাঙচুর করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের বিরোধ হয়েছিল। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরোধ এবারই প্রথম নয়। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তিন দফা বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান করেন।