ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ
ঘুষ-দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদে নেমেছেন মো. হানিফ নামের এক যুবক। দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের উদ্দেশ্যে প্রতীকী লালকার্ড প্রদর্শন করছেন তিনি। আর জেলা প্রশাসকদের দিচ্ছেন স্মারকলিপি।
মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছান হানিফ। এটি তাঁর সফরের ৩২তম জেলা। প্রতিবাদের বিষয় সংবলিত লেখা ব্যানার গলায় ঝুলিয়ে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘোরেন। সেই সঙ্গে ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের উদ্দেশ্যে প্রতীকী লালকার্ড প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া সচেতনতা বিষয়ে বিলি করেন প্রচারপত্র। পরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকারের পক্ষে মিডিয়া সেলের একজন কর্মচারী স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর থেকে যে দল যখন ক্ষমতায় এসেছে, সে দল তখন ঘুষ-দুর্নীতি নৈতিক অবক্ষয়ে নিমজ্জিত ছিল। যা আজ চরম আকার ধারণ করেছে। সমাজ, রাষ্ট্র সর্বত্রই ঘুষ-দুর্নীতি, সামাজিক, মানবিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় চলছে। গুজব ছড়িয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একে অন্যকে কুপিয়ে হত্যা করছে। সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এসব কর্মকাণ্ড নির্মূল সম্ভব।
নোয়াখালী সদর উপজেলার মাইজদী এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. হানিফ। গত ১২ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল ভোটাধিকার ও নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পদযাত্রা করেন তিনি। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরে জনবহুল এলাকায় গণশৌচাগার স্থাপনের দাবিতে প্রচারাভিযান চালান এই প্রতিবাদী যুবক।
গত ৬ মে নির্বাচন কমিশনের সংস্কার ও বর্তমান কমিশনারদের পদত্যাগের দাবিতে পচা আপেল নিয়ে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন হানিফ। সর্বশেষ উদ্যোগ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে লালকার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছেন তিনি। এক জেলা থেকে অরেক জেলায় পরিবহনে যাচ্ছেন। আর জেলা শহরে পায়ে হেঁটে তাঁর কার্যক্রম চালাচ্ছেন। একের পর এক ইতিবাচক কাজের জন্য অনেকে তাঁকে ‘হানিফ বাংলাদেশি’ নামে ডাকেন।
হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, নিজের সঞ্চিত অর্থে ও বন্ধুবান্ধবের সহযোগিতায় সারা দেশ ঘুরছেন তিনি। আগামী ২০ অক্টোবর ৬৪তম জেলা সফর শেষ হবে তাঁর। ইতিবাচক পরিবর্তনের এই লড়াইয়ে অনেকে উৎসাহ দেন। আবার অনেকেই কটূক্তি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, দেশের মানুষ একদিন সচেতন হবে, প্রতিবাদ করতে শিখবে। প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন আসবেই।’