গোয়ালন্দে ৪৭ কেজির বাগাড়, ৫৪ হাজারে বিক্রি
এবার পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় ধরা পড়েছে ৪৭ কেজি ওজনের বিশাল এক বাগাড় মাছ। মঙ্গলবার ভোরে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জেলে আবদুল মমিন হালদারের জালে মাছটি ধরা পড়ে। পরে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মো. সোহেল মোল্লা মাছটি কিনে ঢাকার এক শিল্পপতির কাছে অর্ধ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে দেন।
মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের সঙ্গে মাছটি রশি দিয়ে বেঁধে রাখলে উৎসুক মানুষ একনজর দেখতে ভিড় করেন। কয়েক বছরে এত বড় মাছ ধরা পড়েনি বলে মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা দাবি করেছেন।
সকালে দৌলতদিয়া বাজারের রওশন মোল্লার আড়তে আবদুল মমিন হালদার মাছটি নিয়ে আসেন। এই সময় ওই আড়তের মাছ ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা মাছটি ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন।
মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের সঙ্গে মাছটি রশি দিয়ে বেঁধে রাখলে উৎসুক মানুষ একনজর দেখতে ভিড় করেন। কয়েক বছরে এত বড় মাছ ধরা পড়েনি বলে মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা দাবি করেছেন।
জেলে মমিন হালদার জানান, ‘সোমবার রাতে আমি সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমে যাই। প্রথম দফায় জাল ফেলে মাছ না পেয়ে হতাশ হই। দ্বিতীয়বার জাল ফেললে প্রায় সাত কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ আটকা পড়ে। তৃতীয়বার নদীতে জাল ফেলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকি। ভোররাতে পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জাল ফেলে টানতে থাকি। ভোরে জালের অর্ধেক তোলার সঙ্গে সঙ্গে বড় ধরনের ঝাঁকি দেয়। এতে নৌকায় থাকা সবাই বুঝতে পারি, বড় মাছ আটকা পড়েছে। ছয়টার দিকে জাল টেনে নৌকায় তুলে দেখি, বিশাল আকারের একটি বাগাড় মাছ আটকা পড়েছে। পরে দেরি না করে দ্রুত মাছটি নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসি। এখানে স্থানীয় মৎস্য আড়তদার রওশন আলীর আড়তে মাছটি নিলামে দিই বিক্রির জন্য। এ সময় ওজন দিয়ে দেখতে পাই, মাছটি প্রায় ৪৭ কেজি কাঁচা ওজনের। মৎস্য ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাছটি কিনে নেন।’
দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা বলেন, ‘আমি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে রওশন আলীর আড়ত থেকে ৪৭ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের বাগাড় মাছটি ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে প্রায় ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। দুপুরে ঢাকার গুলশান এলাকার পরিচিত এক শিল্পপতির কাছে মাছটি ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে ৫৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিই।’
গত বৃহস্পতিবার দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটসংলগ্ন জেলে হজরত আলীর জালে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের একটি বাগাড় মাছ ধরা পড়ে। পরে মাছটি স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ৯৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেন। এ ছাড়া দৌলতদিয়ার অদূরে পদ্মা নদীতে গোবিন্দ হালদারের জালে ২৫ কেজি ওজনের বাগাড়, ফারুক হালদারের জালে ধরা পড়ে ২৭ কেজি ওজনের একটি পাঙাশ, শাহীন হালদারের জালে ২০ কেজি ওজনের পাঙাশ।
গোয়ালন্দ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল শরীফ বলেন, এত বড় মাছ এই মৌসুম কেন, গত সাত-আট বছরেও ধরা পড়েনি। এই মৌসুমে আরও বড় মাছ ধরা পড়তে পারে। এটা এ অঞ্চল শুধু নয়, গোটা দেশের জন্য সুখবর।