ময়মনসিংহের টাউন হল মোড় এলাকায় অবস্থিত সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। এই স্ট্যান্ডে দিন দিন বাড়ছে অটোরিকশা। এতে সড়কের দুই পাশে দাঁড়ানো অটোরিকশার সারিও দীর্ঘ হচ্ছে। অটোরিকশার কারণে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ।
টাউন হল মোড় এলাকায় অবস্থিত ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ। দিনে ও রাতে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে যত্রতত্র অটোরিকশা জমে থাকে। এ সমস্যা দিনের পর দিন চলে এলেও কোনো প্রতিকার নেই বলে অভিযোগ কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, অটোরিকশার স্ট্যান্ডটি অবৈধ। মাঝেমধ্যে স্ট্যান্ডটি উঠিয়ে দেওয়া হয় অথবা কলেজের ফটকের সামনে থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে আবার কলেজের ফটকের সামনে ভিড় জমে যায়।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, টাউন হল মোড় এলাকাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। ব্যস্ততম এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। দিন দিন অটোরিকশার সংখ্যা বাড়তে থাকায় সড়কের দুই পাশে অবৈধ দখলও বাড়ছে। বর্তমানে অবৈধ স্ট্যান্ড ঘিরে অটোরিকশার সারি টাউন হল মোড় থেকে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ পর্যন্ত আনুমানিক ২০০ মিটার ছড়িয়েছে। অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে এলাকায় দিনে ও রাতে চালকদের আড্ডা জমে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।
মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের পক্ষ থেকে নানা সময়ে প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। বর্তমানে দুপুর পর্যন্ত অটোরিকশাগুলো কলেজের ফটক ছেড়ে সামান্য দূরে দাঁড়ালেও দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ফটকের সামনে ভিড় করে। কলেজের ভেতর দুটি ছাত্রী হল রয়েছে। দুটি হলে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী থাকেন। তাঁরা সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে বাইরে যাতায়াত করেন। কিন্তু অটোরিকশার কারণে তাঁদের চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে।
কলেজের অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘ফটকের সামনে অটোরিকশার স্ট্যান্ডটি উচ্ছেদের জন্য আমরা অনেকবার পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে বলেছি। আইনশৃঙ্খলার মাসিক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। অনেকবার স্ট্যান্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পর আবার স্ট্যান্ড বসে।’
গত মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, মুমিনুন্নিসা সরকারি কলেজের ফটকের সামনের স্থানটি উন্মুক্ত থাকলেও ফটক থেকে আনুমানিক ৫০ গজ দূরত্বের মধ্যে সড়কের দুই পাশে অটোরিকশার স্ট্যান্ড। মূল সড়ক থেকে কে সি রায় সড়কের সংযোগস্থল এবং কে সি রায় সড়কেও কিছু অটোরিকশা সার করে দাঁড়ানো। চালকেরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে জটলা করে আড্ডা দিচ্ছেন। কয়েকজন চালক নিজেদের নাম প্রকাশ না করে বলেন, আনুমানিক ৩০০ অটোরিকশা প্রতিদিন এ স্ট্যান্ড থেকে যাতায়াত করে। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা ও টাঙ্গাইলের কয়েকটি উপজেলায় চলে অটোরিকশাগুলো। এ স্ট্যান্ডে দাঁড়ানোর জন্য প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ টাকা দিতে হয়। এই টাকায় স্ট্যান্ডের মাস্টারদের (সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি) বেতন দেওয়া হয়। পুলিশ অভিযান চালালে তাঁরা দ্রুত অন্যত্র সরে পড়েন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অটোরিকশার স্ট্যান্ডটি উচ্ছেদ করার জন্য আমরা কাজ করেছি। কিছুদিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা শপথ নেবেন। আশা করি তাঁরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করবেন।’