গাজীপুরে প্রতিমা ভাঙচুর, তিন মামলায় ১৮ জনের রিমান্ড মঞ্জুর
গাজীপুরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার সকালে আদালতে হাজির করে ১৮ জনের সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে কাশিমপুর বাজারের শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র, কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার পারিবারিক মন্দির পরিচালনাকারী সুবল চন্দ্র দাস এবং পালপাড়া নামাবাজার এলাকার সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি পরিমল পাল বাদী হয়ে ওই পৃথক তিন মামলা করেন। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তানভীর আহমদ জানান, শুক্রবার সকালে আদালতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জনের প্রত্যেকের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালতের বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্য দুজনকে ঘটনার দিন আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছিল। তাঁরা সুস্থ হলে পরে তাঁদেরও রিমান্ড চাওয়া হবে।
শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে পূজারিরা মন্দিরে পূজা-অর্চনা করছিলেন। সকাল সাতটার কিছু পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিন শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মন্দিরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা লক্ষ্মী ও অসুরের প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। এতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
একই দিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে দেড়-দু শ লোক কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সুবল দাসের পারিবারিক মন্দিরে এবং স্থানীয় পালপাড়া নামাবাজার সর্বজনীন মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মন্দিরে থাকা সব প্রতিমা ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে ২০ হামলাকারীকে ধরে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে স্থানীয় ও জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। খবর পেয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. জাকির হাসান (অপরাধ) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।