গাঁজা সেবনে দোষী সাব্যস্ত, আদালত দিলেন প্রবেশন
গাঁজা সেবনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও নাটোরে ১০ আসামিকে দণ্ড না দিয়ে এক বছরের জন্য প্রবেশনে পাঠিয়েছেন আদালত। এ সময়কালে তাঁদের হাসপাতালের সেবামূলক কাজে অংশ নেওয়াসহ আটটি শর্ত পালনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যথায় তাঁদেরকে দণ্ড ভোগ করতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ এই আদেশ দেন।
প্রবেশন পাওয়া আসামিরা হচ্ছেন পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার আকরাম হোসেন (৩১), সোহেল রানা (৩৫), শহীদ শেখ (৫৫), জাহাঙ্গীর আলম (৩৭), লিটন শেখ (৪৫), মো. সিদ্দিক (৪৫), আরিফুল ইসলাম (২৫), আসলাম হোসেন (৩২), নাজমুল হোসেন (৩০) ও মেহেদী হাসান (৩০)। আসামিরা আটটি শর্ত মেনে চলছেন কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য আদালত পাবনার প্রবেশন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।
গত ২ মার্চ লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের একটি আমবাগান থেকে গাঁজা সেবনের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করেন এবং দণ্ডাদেশ না দিয়ে আটটি শর্তে এক বছরের জন্য প্রবেশনে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের একটি আমবাগান থেকে গাঁজা সেবনের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে উপপরিদর্শক (এসআই) আলী আযম বাদী হয়ে মাদক আইনে মামলা করেন। মামলাটি বিচারের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদের আদালতে আসে। আজ বিকেলে আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে গাঁজা সেবনের অভিযোগ স্বীকার করেন। এ অবস্থায় আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করেন এবং দণ্ডাদেশ না দিয়ে আটটি শর্তে এক বছরের জন্য প্রবেশনে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
আমরা সঙ্গদোষে মাদক সেবন করেছিলাম। আদালতে তা স্বীকারও করেছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের সাজা না দিয়ে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা আদালতের দেওয়া শর্ত মেনে চলার চেষ্টা করব।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে আসামিরা জীবনে আর কখনো মাদক সেবন করবেন না ও ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন। প্রতি ১৫ দিনে ১ দিন করে পাবনা সদর হাসপাতালে সেবামূলক কাজে অংশ নিতে হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন–২০১৮ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। প্রত্যেকে নিজ এলাকায় রাস্তার পাশে ১০টি করে ফলজ ও ১০টি করে বনজ গাছ রোপণ করবেন। প্রবেশন চলাকালীন সময়ে তাঁদের বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রচারণা চালাতে হবে। সরকারের সব ধরনের মাদকবিরোধী সভা, সমাবেশ, প্রচারণায় অংশ নিতে হবে। উপজেলা প্রবেশন কর্মকর্তার দপ্তরে প্রতি মাসে একবার হাজিরা দিতে হবে। এই আট শর্ত পালনে আদালত তাঁদের কাছ থেকে এক বছরের জন্য হলফনামা নেন।
প্রবেশনপ্রাপ্ত আসামি আকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা সঙ্গদোষে মাদক সেবন করেছিলাম। আদালতে তা স্বীকারও করেছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের সাজা না দিয়ে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা আদালতের দেওয়া শর্ত মেনে চলার চেষ্টা করব। বিশেষ করে মাদক থেকে দূরে থাকব। হাসপাতালের রোগীদের সেবা করে মানবিক হওয়ার চেষ্টা করব।’