গল্পে–স্মৃতিচারণায় তাঁরা ফিরে গিয়েছিলেন শৈশবের স্কুলের দিনগুলোতে
স্কুলের ভেতরে যখন শিশুশিক্ষার্থীরা দোলনায় খেলছিল, তখন স্কুলের বাইরে মাঠে বসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শৈশবের স্মৃতিচারণা করছিলেন। এভাবে গল্প-আড্ডায় কিছুক্ষণের জন্য তাঁরা যেন ফিরে গিয়েছিলেন স্কুলে পড়ার দিনগুলোতে।
আজ শুক্রবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে এ দৃশ্যের দেখা মেলে। ওই বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তিতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন আজ শোভাযাত্রা, স্মৃতিচারণা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ষাটোর্ধ্ব, সত্তরোর্ধ্ব প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তো ছিলেনই। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কারও কারও বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে।
১৯২১ সালে তিলকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০২১ সালে বিদ্যালয়টি শতবর্ষে পা রাখে। গত বছরই শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সামনের মাঠটিতে বিশাল প্যান্ডেল করা হয়েছে। মঞ্চের সামনে প্রবীণ শিক্ষার্থীরা বসে নিজের শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করছেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা যখন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম তখন মাঠে কদমগাছ ছিল। আমরা কদমগাছের নিচে খেলাধুলা করেছি। এখন বিদ্যালয়ের পাকা ভবন হয়েছে। ভেতর খেলাধুলার জন্য দোলনা রয়েছে। আমাদের নাতি-নাতনিরা খেলাধুলা করছে। আজ ওদের খেলার দৃশ্য দেখে শৈশবের কথা মনে পড়ছে। বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূতির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তাই খুশি লাগছে।’
এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ (৬৭), নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক ওসমান গনি (৬৬), পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আহসান তারেক (৫০) মঞ্চে বিদ্যালয়ে পড়াকালীন শৈশবের স্মৃতিচারণা করেন।
আবদুল লতিফ বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আসার পর থেকে শৈশবের সেসব রঙিন দিন মনে পড়ছে বারবার। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজ্ঞ, বিচারক, শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বিদ্যালয়ের শতবর্ষের উৎসবে যোগ দিতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার শতবর্ষ উদ্যাপন শুরু হয়েছে। আগামীকাল শনিবার তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষ হবে। আয়োজনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই সহযোগিতা করেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কমলেন্দু সান্যাল বলেন, বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপনের এ অনুষ্ঠান ইতিহাসে হয়ে থাকবে। প্রধান শিক্ষক হিসেবে এ জন্য নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে।