২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

গলাচিপায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মুখ ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ

বাবার বাড়িতে চলে এসেও রক্ষা পাননি গৃহবধূ তনয়া বেগম (২১)। প্রথমে তাঁর একমাত্র শিশুসন্তানকে কেড়ে নেওয়া হয়। পরে দাহ্য পদার্থের নিক্ষেপে ঝলসে দেওয়া হয় তাঁর মুখ। তনয়ার স্বামী মিলন খানই এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তাঁর (তনয়া) পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের গুপ্তেরহাওলা গ্রামে গতকাল বুধবার ভোররাতে ওই দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। তনয়া এখন মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় তনয়ার বড় ভাই ইভান হাওলাদার বাদী হয়ে মিলন খানকে প্রধান আসামি করে চারজনের নামে গলাচিপা থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে।

ইভান হাওলাদার জানান, তনয়া তাঁদের কাছে খুব আদরের ছিল। প্রায় চার বছর আগে বরিশালের বাবুগঞ্জ এলাকার মিলন খানের সঙ্গে তনয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছরই তনয়ার কোলজুড়ে একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।

তনয়ার স্বামী ট্রাকচালক মিলন বিয়ের আগ থেকেই মাদকাসক্ত ছিলেন কিন্তু তাঁরা তা জানতেন না। বিয়ের পর থেকে মিলন তনয়ার ওপর নানাভাবে নির্যাতন করছিলেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় চার মাস আগে শিশুপুত্রকে নিয়ে তনয়া তাঁর পিতার বাড়ি গলাচিপার গুপ্তেরহাওলা গ্রামে চলে আসেন। পরে তনয়া স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

প্রায় দুই মাস আগে তনয়ার স্বামী মিলন শ্বশুরবাড়িতে এসে তনয়াকে বাড়ি নিয়ে যেতে চান। তবে তনয়া স্বামীর সংসারে না যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার পর কৌশলে শিশুসন্তানকে নিয়ে মিলন শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন। এক সপ্তাহ আগে আবার শ্বশুরবাড়ি এসে তনয়াকে তাঁর সংসারে নিয়ে যেতে চান স্বামী মিলন। কিন্তু তনয়া সাফ না বলে দিলে ক্ষিপ্ত হন মিলন এবং নানাভাবে হুমকি দিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। এ ঘটনার পর গতকাল ভোররাতে ঘরের বেড়ার ফাঁকা অংশ দিয়ে দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মারলে তনয়ার মুখমণ্ডলসহ শরীরে বিভিন্ন স্থান দগ্ধ হয়।

তনয়ার পিতা জলিল হাওলাদার বলেন, ‘আমরা মিলনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

এদিকে দগ্ধ তনয়াকে ভোরেই গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে আসা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. সাইফুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেভাবে দগ্ধ হয়েছে তাতে প্রাথমিকভাবে অ্যাসিডে দগ্ধ বলেই ধারণা করা হয়েছে। এতে গৃহবধূর মুখের বাঁ পাশ, বাঁ চোখ ও বাঁ কান দগ্ধ হয়েছে বেশি। এ ছাড়া দুই হাতের কুইনের নিচের অংশ দগ্ধ হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তনয়াকে বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত আনোয়ার বলেন, এ ঘটনায় দগ্ধ তনয়ার ভাই ইভান বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।