খুলনায় বিএনপি–ছাত্রলীগ সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৯২ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
খুলনায় বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৯২ নেতা–কর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আরও ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিশ্বজিৎ কুমার বোস বাদী হয়ে মামলা করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুন বলেন, সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পুলিশ এ মামলা করেছে। গতকাল বিকেলে আটক মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম ওরফে তুহিনসহ ৩৭ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল বেলা তিনটার দিকে খুলনা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। অন্যদিকে বিকেল চারটার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল চলছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছাত্রলীগ ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সংঘর্ষ শেষে পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে প্রবেশ করে নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করে। সেখান থেকে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলমসহ ৩৭ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অতর্কিতে তাদের সমাবেশে হামলা চালান। এতে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হন। পরে পুলিশ বিএনপির কার্যালয় ও আশপাশ থেকে ৩৭ নেতা-কর্মীকে আটক করে। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই ছাত্রলীগের মিছিলে হামলা করেছে বিএনপি ও ছাত্রদল।
এদিকে গতকাল রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পিকচার প্যালেস মোড় অতিক্রম করার সময় বিএনপির নেতা–কর্মীরা দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। এ সময় বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতা–কর্মীরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংঘর্ষের সময় সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতা–কর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরাও বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগের ওপর মারমুখী হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ১৪ জন পুলিশ সদস্য জখম হন। পরে সরকারি অস্ত্র, গুলি ও জানমাল রক্ষার্থে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও শটগান থেকে গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে গতকালের ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছে খুলনা জেলা বিএনপি।