‘খুনের পর লাশ গুম’–এর শিকার রাকিবকে আদালতে হাজির

মেহেরপুরে ‘খুনের পর লাশ গুমের’ শিকার রাকিবুজ্জামান রিপনকে পাঁচ বছর পর উদ্ধার করে আজ পুলিশ জেলা ও দায়রা জজ আদলতে হাজির করেন
ছবি: প্রথম আলো

মেহেরপুরে ‘খুনের পর লাশ গুম’-এর শিকার রাকিবুজ্জামান রিপনকে আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাঁকে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাঁকে বাবার জিম্মায় দেন।

রাকিবকে খুন করে লাশ গুম করা হয়েছে, এমন অভিযোগে তাঁর বাবা আদালতে মামলা করার পাঁচ বছর পর গত রোববার তাঁকে উদ্ধার করে পিবিআই। ওই দিন বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

পিবিআই কুষ্টিয়ার পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, রাকিবুজ্জামান রিপন ২০১৭ সালের ৪ জুলাই গাংনী উপজেলার ভরাট গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। রিপনের বাবা মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় তিনি ছেলেকে খুনের পর লাশ গুম করার অভিযোগ আনেন। মামলায় রাকিবের শ্বশুর বাদশা মিয়া, শাশুড়ি সফিরন খাতুন, চাচা শ্বশুর হারেজ আলী ও স্ত্রী শ্যামলী খাতুনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি গাংনী থানার পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আরও বলেন, গাংনী থানা মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। ২০২০ সালে প্রথম মামলাটি তদন্ত করেন পিবিআইর কর্মকর্তা মেহেদি হাসান। পরের বছর মামলাটি তাঁর কাছে যায়।

পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর ধরে রাকিবুজ্জামান রিপন পরিচয় গোপন করে গাজীপুরের একটি টেক্সটাইল মিলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছিলেন। নাম বদলে শরিফুল ইসলাম নাম ধারণ করেন। সেখানে তিনি মোছা. শিমলা আক্তার নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। এই সংসারে তাঁদের ছয় মাসের একটি ছেলে আছে। ঠিক কী কারণে তিনি বাড়ি ছেড়েছেন, এ বিষয়ে পুলিশ কিছু বলতে পারেনি।

আজ আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন রাকিবের প্রথম স্ত্রী শ্যামলী খাতুন। তিনি বলেন, হঠাৎ করে বাড়ি থেকে টাকা ও সোনার গয়না নিয়ে উধাও হয়ে যান রাকিব। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রাকিব যখন বাড়ি ছেড়ে চলে যান, তখন তাঁদের ছেলের বয়স ছিল ছয় মাস। এক দিনের জন্যও যোগাযোগ করেননি, এখন ছেলেকে নিতে চাইছেন।

রাকিবের বাবা মনিরুল ইসলাম বলেন, পাঁচটি বছর ছেলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ কারণে পরিবারের সবাই মনে করেছিলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ছেলেকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলেছেন। এ কারণে মামলা করেছিলেন। এখন যখন ছেলেকে পাওয়া গেছে, তাই মামলাটি তুলে নেওয়া হবে।