কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার অনুসারী সেই অস্ত্রধারী ‘পিচ্চি মাসুদ’ গ্রেপ্তার
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অস্ত্র হাতে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া আনোয়ার হোসেন ওরফে পিচ্চি মাসুদকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মোল্লা বাজার এলাকা থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আনোয়ার হোসেন মুছাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কাশেম ওরফে আবুল খায়েরের ছেলে। তিনি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় খুন, ডাকাতি, মাদক, পুলিশের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ২১টি মামলা রয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছে কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে থানাহাজতে রেখে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর অস্ত্রের বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। রোববার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে তিনি বলেন, রোববার বেলা আড়াইটার দিকে থানা-পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২১ মামলার পলাতক কুখ্যাত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন ওরফে পিচ্চি মাসুদকে গ্রেপ্তারে মুছাপুরে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের একপর্যায়ে ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লা বাজারের বিছমিল্লাহ মার্কেটের সামনে থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ রোমেল প্রথম আলোকে বলেন, আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর থানাহাজতে রাখা হয়েছে। তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আগামীকাল সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ। কাদের মির্জার সঙ্গে তাঁর স্থিরচিত্রও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিপূর্বে কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানের অনুসারীদের ওপর হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় মিজানুরের অনুসারীদের ওপর প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে আনোয়ার হোসেনের ধাওয়া করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ছাড়া গত ২১ নভেম্বর রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের বাড়িতে সশস্ত্র হামলাকালে অস্ত্রহাতে আনোয়ার হোসেনকে গুলি করার দৃশ্য সিসিটিভির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
১৩ মের ভাইরাল ভিডিওতে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে ছিলেন আরেক অস্ত্রধারী সহিদ উল্যাহ ওরফে কেচ্ছা রাসেল। ৭ সেপ্টেম্বর রাতে রাসেলকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এরপর আনোয়ার হোসেন অনেকটা আত্মগোপনে ছিলেন।
সূত্র জানায়, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জে অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আনোয়ার হোসেন মুছাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এতে সংঘাতমুক্ত নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়। আজ রোববার দুপুরে তাঁর গ্রেপ্তারের খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।