কেশবপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে আবারো হনুমানের মৃত্যু

কেশবপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে বিরল প্রজাতির কালোমুখো আরেকটি হনুমানের মৃত্যু হয়ছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কোমরপোল গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

যশোরের কেশবপুরে দুই দিনের ব্যবধানে বিদ্যুতায়িত হয়ে বিরল প্রজাতির দুটি কালোমুখো হনুমান মারা গেছে। উপজেলার কোমরপোল গ্রামের লুৎফর গাজীর বাড়ির পাশে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একটি হনুমান মারা যায়। একই স্থানে গত রোববার আরও একটি হনুমান মারা গেছে। হনুমান দুটির পোস্টমর্টেম শেষে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

হনুমান সাধারণত দলবদ্ধভাবে চলাচল করে। এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে চলার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা যায়। প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। হনুমানের এমন মুত্যুতে এলাকাবাসীও ব্যথিত।

বন বিভাগ বলছে, বিদ্যুতায়িত হয়ে হনুমানের মৃত্যু কোনোভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। গত চার মাসে কেশবপুরে বিদ্যুৎতায়িত হয়ে অন্তত চারটি হনুমান মারা গেছে। কেশবপুরে প্রায় সাড়ে তিন শ হনুমান রয়েছে। এসব হনুমান শহরের উপজেলা এলাকা হাসপাতাল, সাহাপাড়া, শ্রীগঞ্জ, বায়সা, রামচন্দ্রপুর, মধ্যকুল এলাকায় বেশি থাকে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামেও বিচরণ রয়েছে। বিশেষ করে যেখানে গাছগাছালি রয়েছে, সেখানে এসব হনুমান চলে যায়। এ ছাড়া খাবারের সন্ধানে হনুমান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে। কলাবোঝাই ট্রাক, সবজির ট্রাকে উঠে হনুমানগুলো দূরে চলে যায়।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, খাবারের সংকটের কারণে হনুমানগুলো প্রায়ই অন্যত্র চলে যাচ্ছে। খাদ্যসংকটের কারণে হনুমানের স্বভাবও পরিবর্তিত হয়েছে। এগুলো এখন মানুষের কাছাকাছি আসে। মানুষের কাছ থেকে খাবার চেয়ে খায়। কখনো কখনো মানুষের কাছ থেকে খাবার কেড়েও নিয়ে যায়। বিশেষ করে হাসাপাতাল এলাকায় রোগীর জন্য কলা, ফল, পাউরুটি নিয়ে গেলে হনুমানের দল হানা দিয়ে কেড়ে নেয়।

বন বিভাগ এখন প্রতিদিন হনুমানের খাদ্য হিসেবে কলা ৫৪ কেজি, ৮ কেজি বাদাম ও ৬ কেজি পাউরুটি সরবরাহ করে। এ জন্য মাসে বরাদ্দ ৯৬ হাজার টাকা। হনুমানের বিচরণ এলাকায় এসব খাবার দেওয়া হয়।

কেশবপুর বন বিভাগের ফরেস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, হনুমানের বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু ঠেকানোর একমাত্র উপায় বিচরণ এলাকায় বিদ্যুতের তার ঢেকে দেওয়া। তা না হলে এ মৃত্যু ঠেকানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। হনুমানের জন্য বর্তমানে যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়, তা অপ্রতুল। আরও খাবার সরবরাহ করা গেলে ভালো হতো।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেশবপুর কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক আবদুল লতিফ বলেন, কেশবপুর উপজেলা এলাকায় কিছু তার ঢাকা আছে। নতুন করে খাদ্যগুদামের মধ্যেও তার ঢাকার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে হনুমান উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এই বৃহত্তর এলাকায় তার ঢাকা সম্ভব নয়।