নাগেশ্বরী পৌরসভা নির্বাচন
কেন্দ্রের ভুলেই নাগেশ্বরীতে হারলেন আ.লীগ প্রার্থী
উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটে ফরহাদ হোসেন তিন ভোট পান। এরপরও কেন্দ্র থেকে তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী চতুর্থ হয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর এমন ভরাডুবির পেছনে কেন্দ্রের ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করছেন তৃণমূলের নেতারা। তাঁদের মতে, অপরিচিত ও অজনপ্রিয় ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ায় ফলাফলে বিপর্যয় ঘটেছে।
এই পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগেরই ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। আর দলীয় প্রার্থী ফরহাদ হোসেন জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও কুড়িগ্রাম-১ আসনের সাংসদ আসলাম হোসেন সওদাগরের ভাই। নির্বাচনে মোহাম্মদ হোসেন পান ১১ হাজার ৯৭৪ ভোট। আর ফরহাদ হোসেন পান ৫ হাজার ৭২ ভোট।
দলীয় প্রার্থীর এমন নেতিবাচক ফলাফল নিয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, ফরহাদ হোসেন এলাকায় জনপ্রিয় নন। তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিলেন না। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন। উপজেলা পর্যায়ে বাছাইপর্বে তিনি ৪৬টি ও ফরহাদ হোসেন ৩টি ভোট পান। নেতা-কর্মীদের মতের প্রতিফলনই কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কিন্তু কেন্দ্র জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিয়ে ‘ভুল’ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়। ফলে নির্বাচনের সময় কর্মীরাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে তেমন প্রচারণায় নামেননি।
ফরহাদ হোসেন এলাকায় জনপ্রিয় নন। আর তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন।
১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে পঞ্চম হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী শহিদুল ইসলাম। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে ৮০৯ ভোট পান। ৯ হাজার ৩০৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন জাতীয় পার্টির আবদুর রহমান, ৬ হাজার ৮৭১ ভোটে তৃতীয় হন বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের রফিকুল ইসলাম।
ভোটের ফল নিয়ে কথা হয় পৌরসভার মানিকগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান ও হাসপাতাল এলাকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপির অনেক সমর্থকও মোহাম্মদ হোসেনকে ভোট দিয়েছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী দলেরও ভরাডুবি হয়েছে। আগের নির্বাচনগুলোতে বিএনপির প্রার্থীরা অন্তত ৮–৯ হাজার করে ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার এক হাজার ভোটও পাননি।
এবারের নির্বাচনে বিএনপির অনেক সমর্থকও মোহাম্মদ হোসেনকে ভোট দিয়েছেন। এ কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী দলেরও ভরাডুবি হয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী শহিদুল ইসলাম দলের উপজেলা কমিটির সদস্য। ভরাডুবির বিষয়ে তিনি বলেন, দলের ‘হেভিওয়েট’ নেতারা নির্বাচনে অংশ নেননি। তাই প্রার্থী না থাকায় তাঁকে নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর দলের নেতা-কর্মীরাই তাঁকে সহযোগিতা করেননি। এ কারণেই ফল এমন হয়েছে।