কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে ৩৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

হাসিবুর রহমানকে হত্যার দাবি করে বিচার চেয়ে মানববন্ধন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে প্রেসক্লাবের সামনেছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের চার দিন পর সাংবাদিক হাসিবুর রহমান ওরফে রুবেলের (৩১) লাশ উদ্ধারের ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে খুনিদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনকে ৩৬ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন সাংবাদিকেরা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরে প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় জেলার আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে সাংবাদিকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে প্রেসক্লাবে কুষ্টিয়া এডিটরস ফোরামের এক জরুরি সভায় হাসিবুরের খুনিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত কুষ্টিয়া থেকে স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা না ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন ফোরামের সভাপতি নূর আলম দুলাল ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুল শেখ।

নিখোঁজের চার দিন পর বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদ থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

হাসিবুর কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লক এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। পাশাপাশি ঠিকাদার ছিলেন তিনি।

সন্ধ্যার বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম, এনটিভির প্রতিনিধি সাবিনা ইয়াসমিন, নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেলের স্টাফ রির্পোর্টার জাহিদুজ্জামান, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদী হাসান, দেশ টিভির প্রতিনিধি নাহিদ হাসান, বাংলা টিভির প্রতিনিধি এম লিটন উজ জামান প্রমুখ।

এরপর রাত নয়টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভায় হাসিবুরের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামীকাল শুক্রবার লাশ দাফন শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল, শনিবার কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে কলমবিরতি, মঙ্গলবার থানার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ, বুধবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও ঘেরাও কর্মসূচি এবং আগামী বৃহস্পতিবার পুলিশের সুপারের কার্যালয় ঘেরাও।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার রাত নয়টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে হাসিবুর পত্রিকা অফিসে ছিলেন। ওই সময় মুঠোফোনে একটি কল পেয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান তিনি।

আরও পড়ুন

এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তাঁর পরিবার।

এর চার দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদ থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাব্বিরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, লাশ বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। শুক্রবার লাশের ময়নাতদন্ত হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।