বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর এবার বিপ্লবী বাঘাযতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে। বাঘাযতীনের ভাস্কর্যটি কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে কয়া মহাবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সড়কের পাশে স্থাপিত।
ঘটনাস্থলে যান কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীবুল ইসলাম খান ও কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান।
ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ওই মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি নিজামুল হক, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমান ও কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ইউএনও রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, ভাস্কর্যের ডান গালে ও নাকের ওপর আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়ার আগে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, মহাবিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা মেবাইলফোনে বলেন, কে বা কারা ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে। সেখানে যাওয়া হচ্ছে।
মহাবিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন বাঘাযতীন। এই কয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি একাই বাঘের সঙ্গে লড়াই করে বাঘ হত্যা করেছিলেন বলে তিনি বাঘাযতীন নামে পরিচিত পেয়েছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে গ্রামের মহাবিদ্যালয়ের সঙ্গে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। কুমারখালী উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেছিলেন।
রাতে ওই মহাবিদ্যালয়ে খলিলুর রহমান নামের এক নৈশপ্রহরী দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকে তিনি জোরে একটি শব্দ শুনতে পান। এরপর কলেজের বাইরে এসে দেখতে পান তিনজন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেলে করে সড়কের দুই দিক দিয়ে চলে যাচ্ছে।
কুমারখালী থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ওই মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি নিজামুল হক, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমান ও কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত আজ বেলা দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কুমারখালী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলার দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থলে পিবিআই জেলা গোয়েন্দা পুলিশসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।