কুমিল্লায় স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে তিন ব্যক্তির আমৃত্যু কারাদণ্ড
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় জাহিদ হাসান নামের এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় তিন ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটায় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৪-এর বিচারক সেলিনা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন। জাহিদ হোমনা উপজেলার সাপলেজী গ্রামের মো. আক্তারুজ্জামানের ছেলে এবং দুলালপুর চন্দ্রমণি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে মো. খাইরুল ইসলাম (২২) উপস্থিত থাকলেও অপর দুই আসামি জিহাদ হোসেন (২৪) ও এমদাদ হোসেন (২২) হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর থেকে পলাতক। খায়রুল মুরাদনগর উপজেলার শাহজালালের ছেলে। অপর দুই আসামি জিহাদ ও এমদাদের বাড়ি হোমনা উপজেলার ভিটিকালমিনা গ্রামে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর জাহিদকে বাড়ির পাশ থেকে কৌশলে অপহরণ করেন তারই জ্যেষ্ঠ তিন বন্ধু। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে পরের দিন ৫ নভেম্বর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অপহরণকারীরা ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিহতের চাচা মাসুদ রানার মুঠোফোনে কল দিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। তিনি জাহিদের পরিবারকে বিষয়টি জানালে তাঁরা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানান। পরে মুঠোফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জিহাদ, এমদাদ ও খাইরুলকে আটক করে পুলিশ।
তখন পুলিশ জানিয়েছিল, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মুক্তিপণ দাবি ও জাহিদকে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখেন বলে স্বীকার করেন। তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দুলালপুর চন্দ্রমণি উচ্চবিদ্যালয়ের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে জাহিদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
রায়ের পর জাহিদের বাবা ও মামলার বাদী মো. আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে তাঁরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন। আমি এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমি তাঁদের মৃত্যুদণ্ড আশা করেছিলাম।’ বাদীপক্ষের আইনজীবী মুজিবুর রহমান বলেন, মামলার বাদী এ রায়ে সন্তুষ্ট নন। রায়ের কপি পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন তাঁরা।