কুমিল্লায় অভিযোগ, সরকার পতনের দিন দোকান দখল করেন শ্রমিক দল নেতা

কুমিল্লায় শ্রমিক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে দোকান দখল করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের টমছম ব্রিজ এলাকার একটি রেস্তোরাঁর হলরুমেছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট কুমিল্লায় শ্রমিক দলের এক নেতা দলবল নিয়ে তিনটি দোকান দখলের অভিযোগ করেছেন কুমিল্লা নগরের গাংচর এলাকার কবির হোসেন এবং কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কারচর এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর মেয়ে মুন্নী আক্তার।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের টমছমব্রিজ এলাকার একটি রেস্তোরাঁর হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এসব অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মো. মাহবুব হোসেন ওরফে মামুন। তিনি নগরের চকবাজার বালুধূম এলাকার মেতু মিয়ার ছেলে ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শ্রমিক দলের সাবেক সহসভাপতি। ৩টি দোকানের মূল্য অন্তত ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কবির হোসেন ও মুন্নী আক্তার বলেন, ২০১৮ সালে নগরের শুভপুর এলাকার প্রয়াত সফিকুর রহমানের ওয়ারিশ রোকেয়া বেগমের কাছ থেকে সাফকবলা দলিলে যৌথভাবে তিনটি দোকান কেনেন কবির হোসেন এবং মুন্নী আক্তারের বাবা প্রয়াত মোহাম্মদ আলী। দোকানগুলো তিনজনের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সন্ধ্যায় মাহবুব হোসেন ৭০ থেকে ৮০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে দোকান ৩টি দখল করে প্রথমে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে ভাড়াটিয়াদের তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেন। জায়গার প্রকৃত মালিকেরা ঘটনাস্থলে গেলে মামুন ও তাঁর লোকজন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের চলে যেতে বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ওই সময় দেশের পরিস্থিতির কারণে কোথাও আইনি সহায়তা চাওয়ার সুযোগ না থাকায় ১৮ আগস্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন। কিন্তু তিন সপ্তাহেও প্রশাসন থেকে কোনো সাড়া পাননি তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৮ সালে জায়গাটি কেনার পর তাঁরা জানতে পারেন, বিএস জরিপে জায়গাটি মাহবুব হোসেনের নামে লিপিবদ্ধ হয়েছে। পরে ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁরা আদালতে নাম সংশোধনের জন্য মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৯ অক্টোবর। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সরকার পতনের দিনই দোকানগুলো দখলে নেন ওই শ্রমিক দল নেতা।

আজ দুপুরে এসব বিষয়ে জানতে শ্রমিক দল নেতা মাহবুব হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কাগজপত্র ছাড়া কথা বলতে পারবেন না বলে সংযোগ কেটে দেন। পরে একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি এখনই আমরা শুনেছি। দলের নাম ভাঙিয়ে যাঁরাই কোনো অপকর্মে জড়িত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। অভিযোগ সত্যি হয়ে থাকলে এভাবে দোকান দখল করার কোনো সুযোগ নেই।’