কাফনের কাপড় পরে প্রতীক আনতে গিয়ে হামলার শিকার প্রার্থী, ১৫ জনকে জখম
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় থেকে হত্যার হুমকি পাচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। প্রতিবাদ হিসেবে আজ মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাচনী কার্যালয়ে কাফনের কাপড় পরে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রতীক আনতে যান তিনি। পথে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় ১৫ জনকে পিটিয়ে-কুপিয়ে জখম করেছেন তাঁরা। ভাঙচুর করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ১০টি মোটরসাইকেল।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা সড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ওই বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন আলাউদ্দিন সরদার। তিনি উপজেলা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে রয়েছেন। আজ ছিল নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের দিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলাউদ্দিন সরদার পেয়েছেন চশমা প্রতীক।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ ঘটনার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাউদ্দিন সরদারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। কিন্তু এখনো তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ দেননি।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন ফকির বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ দল পাঠিয়েছেন। পুলিশ যাওয়ার আগে উভয় পক্ষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
নৌকার কর্মীরা এ সময় তাঁর কর্মীদের ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন বলে জানান আলাউদ্দিন সরদার।
চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাতটি ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পক্ষিয়া ইউপি তার একটি। যাচাই–বাছাই ও প্রত্যাহারের পরে ছয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন। স্থানীয় লোকজন বলছেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নাগর হাওলাদার (নৌকা প্রতীক) এবং দলটির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দিন সরদারের (চশমা প্রতীক) মধ্যে মূল লড়াই হবে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন সরদার প্রথম আলোকে বলেন, মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নাগর হাওলাদারের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। এ জন্য তিনি আজ বেলা ১১টার কাফনের কাপড় পরে প্রতীক আনতে যান। উপজেলা নির্বাচনী কার্যালয়ে যাওয়ার পথে উপজেলা চত্বরসংলগ্ন সড়কে এলে নাগর হাওলাদারের অস্ত্রধারী নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় কুপিয়ে-পিটিয়ে তাঁর কর্মী আমজাদ হোসেন, নাছির আহমেদ, মো. রাসেল, নুরুন্নবী, রাকিবুল ইসলামসহ ১৫ জনকে জখম করেন। নৌকার কর্মীরা এ সময় তাঁর কর্মীদের ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন বলে জানান আলাউদ্দিন সরদার। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে ও বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী নাগর হাওলাদার বলেন, ‘আমি উপজেলা নির্বাচনী কার্যালয় থেকে প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় চলে এসেছি। পরে আলাউদ্দিন সরদার কাফনের কাপড় পরে প্রতীক আনতে যায় বলে শুনেছি। সে আমাকে গালিগালাজ করেছে শুনেছি। তবে হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে কিছু জানি না।’