নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কাউকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম। একই সঙ্গে ভোট গ্রহণের আগের দিন রাতে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট যাতে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ না পান, সে বিষয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আজ রোববার কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ‘নির্বাচনী ব্রিফিংয়ে’ তিনি এসব কথা বলেন। কোম্পানীগঞ্জ থানা–পুলিশ আয়োজিত ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা, জেলা আনসার ভিডিপির সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট মো. নুরুল আফছার চৌধুরীসহ পুলিশ ও আনসার ভিডিপির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের দিন হাতখরচের জন্য কিছু টাকা দিয়ে দিচ্ছি। সে টাকা দিয়ে যা হয়, আপনারা খাবারের ব্যবস্থা করে নেবেন। বাইরের কোনো লোকের কাছ থেকে কোনো ধরনের খাবার, অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নেবেন না। বিগত নির্বাচনগুলো আমরা অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছি। আগামীকালের নির্বাচনও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শেষ করতে চাই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার বলেন, ‘জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে জন্য আপনাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে কাউকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। আপনারা প্রত্যেকে নিরপেক্ষতার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন।’
কেন্দ্রের কোনো পুলিশ সদস্য বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা অনিয়ম করছে দেখলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ জানিয়ে শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি যেই হোন, তাঁকে আমরা সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার করব। এর আগে অনিয়মের জন্য কেন্দ্র থেকে পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুতরাং আপনারা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি সজাগ থাকবেন।’
সপ্তম ধাপে আগামীকাল কোম্পানীগঞ্জের আটটি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন শুধু ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা। অন্যদিকে তিনটি ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়ছেন।
আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে দলীয় প্রতীক না দেওয়া হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিটি ইউপিতে একজন করে প্রার্থীকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা প্রতিটি ইউনিয়নে তাঁর অনুসারী একজন করে প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনটি ইউপিতে কাদের মির্জার প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী তাঁর তিন ভাগনে। তাঁরা হলেন চর পার্বতীতে মাহবুবুর রশিদ (মঞ্জু), রামপুরে সিরাজিস সালেকিন (রিমন) ও চর ফকিরায় জায়দল হক ওরফে কচি।
কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে তিনি তাঁর প্রার্থীদের পক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নেই গণসংযোগ করেছেন। অন্যদিকে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলও তাঁর অনুসারী প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন।