নির্বাচনে প্রার্থী টাকাপয়সা খরচ করে কর্মী-সমর্থকদের খাওয়ান, এমনটাই রেওয়াজ। কিন্তু জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভায় ঘটেছে এর উল্টো ঘটনা। এখানকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার লোকজন নিজেরাই চাঁদা দিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী রফিকুল ইসলামের পক্ষে খিচুড়িভোজের আয়োজন করেছেন।
গতকাল শুক্রবার রাতে শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের মাঠে ওই নির্বাচনী ভোজের আয়োজন করা হয়। এর আগে বিকেল চারটার দিকে মহল্লার লোকজন রফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে ওয়ার্ডে মহড়া দেন।
মহল্লার আবদুল জলিল বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম অন্য প্রার্থীদের চেয়ে তুলনামূলক কম অবস্থাপন্ন। তাই আমরা চাঁদা দিয়ে নির্বাচনী ভোজের আয়োজন করেছি। আমিও ২০০ টাকা দিয়েছি।’
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ছয়টি চুলা তৈরি করা হয়েছে। রান্নার আয়োজন চলছে।
প্রধান বাবুর্চি নুরুজ্জামান বলেন, ছয় মণ চাল ও দেড় মণ মসুর ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা হচ্ছে। আপৎকালীন এক মণ চাল মজুত রাখা হয়েছে। প্রায় দুই হাজার মানুষ খেতে পারবে।
মহল্লার মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমি দুই কেজি চাল দিয়েছি। আমার মতো অনেকেই চাল-ডাল দিয়েছেন। আমরা রফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে খিচুড়ি খাব।’
মহল্লার বাসিন্দারা জানান, পৌর নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে অনেক আগে থেকেই এখানে নির্বাচনের ডামাডোল শুরু হয়েছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে তিন-চারজন প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে রফিকুল ইসলাম তুলনামূলক গরিব। তিনি আগে একবার কাউন্সিলর ছিলেন। মহল্লার লোকজন তাঁকে ভালোবাসেন। এ কারণে নিজেরাই সামর্থ্য অনুযায়ী চাঁদা দিয়ে ভোজ ও শোডাউনের আয়োজন করেছেন। এই ভোজে প্রায় ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাঁরা প্রার্থীর কাছে একটি টাকাও নেননি। উল্টো প্রার্থীকে ভোজের দাওয়াত দিয়েছেন।
এ মহল্লার শুকুর আলী বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ হিসেবে সামর্থ্য অনুযায়ী ১০ টাকা দিয়েছি। আমরা মতো সবাই যে যাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা-চাল দিয়েছেন। একতাই বল বলে কথা।’
জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আগেও কাউন্সিলর ছিলাম। গত নির্বাচনে সামন্য ভোটের ব্যবধানে জিততে পারিনি। এবার নির্বাচনে প্রার্থী হব। শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার লোকজন আমাকে খুব ভালোবাসেন।’
৬ নম্বর ওয়ার্ডটি হাস্তাবসন্তপুর ও শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লা নিয়ে গঠিত। এ ওয়ার্ডে ভোটার আড়াই হাজারের মতো। এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আরও যাঁরা প্রচারণা চালাচ্ছেন তাঁরা হলেন রিপন প্রামাণিক, ফেরদৌস হোসেন ও নিয়াজ মোর্শেদ।