চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীদের আগ্রহ অনেক কম। টিকার জন্য অনলাইনে নারীদের নিবন্ধনের হারও কম।
টিকার ইতিবাচকতা নিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রচার-প্রচারণা কম হওয়ায় এবং টিকাভীতির কারণে এ সমস্যা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় প্রথম কিস্তিতে করোনাভাইরাসের ৩ হাজার ২৬০ ডোজ টিকা পৌঁছায়। ওই টিকা নেওয়ার জন্য আজ রোববার পর্যন্ত অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ৫০০ জন। এর মধ্যে ১৭৫ জন নারী ও ৩২৫ জন পুরুষ। নিবন্ধিত ব্যক্তিদের মধ্যে নারীর হার ৩৫ শতাংশ। বাকি ৬৫ শতাংশই পুরুষ।
সূত্রটি আরও জানায়, আজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক পর্যায়ে করোনার টিকা নেন ৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৬ জন এবং নারী মাত্র ৪ জন। টিকা গ্রহণকারী নারী ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বাকি ৮৬ শতাংশের বেশি পুরুষ। টিকা গ্রহণকারী নারীরা হচ্ছেন জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আকতার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স রাফিয়া আক্তার ও নমিতা রানী সরকার এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক প্রীতিলোদ রানী। পুরুষদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম কাউসার, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজিব কিশোর বণিক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহিম খান, মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া, চিকিৎসা কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ প্রোপেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আ তা ম বোরহান উদ্দিন, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তানভীর হাসানসহ ২৬ জন টিকা নেন।
টিকা নেওয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আকতার ও নার্স রাফিয়া আক্তার বলেন, টিকা নেওয়ার পর তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। কোনো জটিলতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। যেহেতু নারীদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা কম, সেহেতু সব নারীর উচিত করোনার টিকা নেওয়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক বলেন, টিকা নেওয়ার জন্য স্থানীয় লোকজনকে তেমনভাবে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে না। টিকার ইতিবাচক দিক নিয়েও লোকজনকে সচেতন করা হয়নি সেভাবে। এ ছাড়া অনেকের মধ্যেই টিকাভীতি কাজ করছে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি। কারও কারও মধ্যে টিকা নিয়ে কুসংস্কারও রয়েছে। এসব কারণে টিকা গ্রহণে বা টিকার নিবন্ধনে নারীরা তেমনভাবে উৎসাহিত হচ্ছেন না।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম কাউসার প্রথম আলোকে বলেন, টিকা গ্রহণের জন্য তাঁর উপজেলায় প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। টিকার জন্য যাঁরা অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন বা যাঁরা এখনো নাম নিবন্ধন করেননি, তাঁদের টিকা নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। টিকা গ্রহণকারী লোকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে বলেই তাঁর বিশ্বাস।