ওঝার বাড়িতে নিয়ে ঝাড়ফুঁক, মারা গেলেন সাপে কাটা অন্তঃসত্ত্বা
গৃহবধূ সুলতানা খাতুনকে (২৩) বিষধর সাপে কেটেছিল। বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে স্বজনেরা সুলতানাকে দুই ওঝার কাছে নিয়ে ঝাড়ফুঁক করান। ঘটনার চার ঘণ্টা পর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আজ রোববার সকালে সুলতানাকে দাফন করা হয়েছে।
এ ঘটনা পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা গ্রামের। সুলতানা খাতুন ওই গ্রামের শাহানুর প্রামাণিকের স্ত্রী। এ দম্পতির চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। সুলতানা দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
সুলতানার প্রতিবেশী টিক্কা খান বলেন, গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সুলতানা গোয়ালে গরুর জন্য ঘাস দিতে যান। এ সময় তাঁর পায়ে বিষধর সাপ কামড় দেয়। তাঁর চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন দৌড়ে আসে এবং রশি দিয়ে পা বেঁধে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। দুই ঘণ্টা পার হলেও তাঁর অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সেখান থেকে তাঁকে বেড়া পৌর এলাকার বনগ্রাম মহল্লার আরেক ওঝার কাছে নেওয়া হয়। সেখানেও ঘণ্টা দু-এক তাঁকে ঝাড়ফুঁক করেন ওঝা। রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্বজনেরা সুলতানাকে বেড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার রাতেই স্বজনেরা সুলতানার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। রাত ১২টার দিকে তাঁরা আরেক ওঝাকে বাড়িতে ডেকে এনে ঝাড়ঝুঁক করান। ওই ওঝা কিছুক্ষণ পর জানান, রোগী সত্যিই মারা গেছেন। আজ সকালে তাঁকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জান্নাত বলেন, ‘সাপে কামড়ানো ওই রোগীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। আমাদের হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। ওঝার কাছে না নিয়ে সময়মতো হাসপাতালে রোগীকে আনলে হয়তো তাঁকে বাঁচানো যেত।’