এতিমখানার জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় একটি এতিমখানার জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কাঁঠালিয়া উপজেলার দক্ষিণ চেঁচরী আবদুল মুত্তালিব এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসার সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৫ ডিসেম্বর রাতে একদল সন্ত্রাসী মাদ্রাসা ভাঙচুর করে জমি দখলের চেষ্টা করে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, যেকোনো সময় সন্ত্রাসীরা পুনরায় মাদ্রাসায় হামলা চালাতে পরে।
সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে তিনি তাঁর বাবার নামে দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামে এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এ এতিমখানা ও মাদ্রাসায় ২০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। পুরোনো ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় ২০১৮ সালে মাদ্রাসার জন্য একটি নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করতে গেলে ঝালকাঠি আইনজীবী সহকারী সমিতি থেকে বহিষ্কৃত মোশারফ জমাদ্দারের নেতৃত্বে ১৪–১৫ জনের একদল সন্ত্রাসী ভবনের নির্মাণকাজে বাধা দেয়। রাতের আঁধারে সন্ত্রাসীরা ইটের গাঁথুনি ভেঙে ফেলে। মোশারফ স্থানীয় সালিসব্যবস্থার তোয়াক্কা না করায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিবাদী করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করে। মামলায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করেন এবং কাঁঠালিয়া থানাকে মাদ্রাসার জমিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। এ আদেশে ক্ষুব্ধ হয়ে মোশারফ জেলা জজ আদালতে রিভিশন করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ স্থগিত করান। পরে তিনি এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করলে হাইকোর্ট গত ২ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার পক্ষে আদেশ প্রদান করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ বহাল রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, হাইকোর্টের রায়ের কপি কাঁঠালিয়া থানা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দিয়ে ১৫ নভেম্বর নির্মাণকাজ শুরু করতে গেলে মোশারফের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী নির্মাণসামগ্রী লুট করে নেয় এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে নির্মাণকাজ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। সর্বশেষ ৫ ডিসেম্বর রাতে মোশারফ মাদ্রাসার জমি দখল করে টিনের ঘর তৈরির চেষ্টা করেন, যা এলাকাবাসী প্রতিরোধ করেন। মোশারফ ও তাঁর দলবল রাতের আঁধারে এতিমখানার ছাত্রাবাসের ছাত্রদের ভয় দেখানোর জন্য ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, যাতে ছাত্ররা ভয়ে পালিয়ে যায়।
এতিমখানার সম্পত্তি রক্ষা, ছাত্রদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী মোশারফ বাহিনীর হাত থেকে মাদ্রাসার সচিব ও শিক্ষকদের রক্ষার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান মোস্তাফিজুর।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মোশারফ বলেন, ‘মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমার ভাইয়ের সম্পত্তি জোর করে লিখে নিয়েছে, আমার সম্পত্তিও দখলের চেষ্টা করছে।’