এক শ্যালককে হত্যা করে অপরজনকে হত্যার চেষ্টা, দুলাভাই আটক
নিজের সন্তানকে ঢাকা নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শ্বশুর ও স্ত্রী নিয়ে যেতে দেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এক শ্যালককে পানিতে চুবিয়ে হত্যা এবং অপর শ্যালককে একইভাবে হত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা এলাকায়। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছে।
মারা যাওয়া শিশুর নাম আবদুল্লাহ (৬)। সে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা এলাকার ছগীর মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোসলেম। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জে। বৃহস্পতিবার আবদুল্লাহকে হত্যার পর বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মোসলেম তাঁর অপর শ্যালক আফসানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন এই ঘটনা দেখে ফেলে শিশুটিকে উদ্ধার এবং তাঁকে আটক করেন। এখন পর্যন্ত আবদুল্লাহর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ডালভাঙা এলাকায় বিষখালী নদীসংলগ্ন একটি দিঘিতে আফসানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করছিলেন মোসলেম। এই ঘটনা দেখে দ্রুত সেখানে গিয়ে শিশুটিকে মোসলেমের কাছ থেকে উদ্ধার করেন এলাকাবাসী। পরে তাঁরা তাঁকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোসলেমকে আটক করে। এ সময় পুলিশের কাছেও হত্যার বিবরণ দেন মোসলেম।
মোসলেম সপ্তাহখানেক আগে এসে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা মোসলেমের কাছে আমার নাতিকে দিতে রাজি হইনি। এর জেরে আমার ছেলেদের হত্যার পরিকল্পনা করে মোসলেম
নিহত আবদুল্লাহর বাবা মো. ছগীর জানান, ‘তিন মাস আগে আমার স্ত্রী মারা যায়। আবদুল্লাহ (৬) ও আফসানকে (১৮ মাস) আমার মেয়েরা লালপালন করত। আমার মেয়ে ছবির স্বামী মোসলেম। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জে। সে ঢাকায় রিকশা চালায়। সপ্তাহখানেক আগে সে বরগুনায় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডালভাঙা এলাকায় নানাশ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে আবদুল্লাহ ও আফসানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় মোসলেম। সন্ধ্যার পরে আমি জানতে পারি মোসলেম আমার বড় ছেলে আবদুল্লাহকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর লাশ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া সে আমার ছোট ছেলে আফসানকে একই প্রক্রিয়ায় হত্যার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করে।’
মোসলেমের শ্বশুর ছগীর অভিযোগ করেন, ‘মোসলেম সপ্তাহখানেক আগে এসে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা মোসলেমের কাছে আমার নাতিকে দিতে রাজি হইনি। এর জেরে আমার ছেলেদের হত্যার পরিকল্পনা করে মোসলেম।’
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল্লাহর লাশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মোসলেম তাঁর শ্যালককে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।