এক পা ভাঙা, এবার অন্য পায়ে হাতুড়িপেটা

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক ইউপি সদস্য কাজী আবদুর রউফ
ছবি: প্রথম আলো

মাগুরায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁর মাথায় ও হাতে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাতের পাশাপাশি একটি পায়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রায় ১০ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারান সাবেক ওই ইউপি সদস্য। কৃত্রিম পা দিয়ে খুঁড়িয়ে চলা ওই ব্যক্তির এখন স্থায়ী পঙ্গু হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

হামলার শিকার কাজী আবদুর রউফ (৪০) শ্রীপুর উপজেলার সদর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। বর্তমানে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির দায়িত্বে আছেন তিনি। গতকাল রাত ১১টার দিকে তখলপুর গ্রামে নিজ বাড়ির অদূরে হামলার শিকার রউফ এখন মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রউফ বলেন, রাতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির আসন্ন নির্বাচনের আলোচনা শেষে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। তখলপুর গ্রামের কৃষ্ণগাছতলা মোড় এলাকায় এলে সাত থেকে আটজন লোক তাঁর পথ রোধ করে। মোটরসাইকেলের ওপর থাকতেই প্রথমে মাথায় আঘাত করলে পড়ে যান তিনি। এরপর হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি বাঁ পায়ে হাতুড়ি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে।

রউফ আরও বলেন, ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য মকবুল হোসেন বিশ্বাস নিজে উপস্থিত থেকে তাঁর লোকজন নিয়ে হামলা করেছেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ড থেকে জানানো হয়, রউফের মাথায় ভারী বস্তু ও একটি হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এ ছাড়া ডান পায়ের হাড় ভেঙে গেছে।

আহত রউফের বড় ভাই কাজী মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে ইউপি নির্বাচনে রউফকে পরাজিত করে মকবুল হোসেন মেম্বার (ইউপি সদস্য) নির্বাচিত হন। এরপর গ্রামের একটি মাদ্রাসায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে দুজনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব কারণে প্রতিপক্ষকে মাঠ ছাড়া করতে ওকে (কাজী আবদুর রউফ) চিরতরে পঙ্গু করে দিতেই এ হামলা চালিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালের দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারান রউফ। এরপর কৃত্রিম পা দিয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটাচলা করতেন।

অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রীপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য মকবুল হোসেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতের আঁধারে কে বা কারা তাঁকে মেরেছে বলে শুনেছি। ওই সময় আমি বাড়িতে ছিলাম। ভাত খাচ্ছিলাম। রাজনৈতিক কারণেই আমার নাম জড়ানো হচ্ছে।’

জানতে চাইলে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুকদেব রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ওই গ্রামে সামাজিক দলাদলি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সেটা নিয়েই সাবেক ওই ইউপি সদস্যের ওপর হামালা হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত অভিযোগ নিয়ে কোনো পক্ষ থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।