এ অঞ্চলে হৃদ্রোগের কারণ জিনগত: দেবী শেঠি
বাংলাদেশ এবং ভারতের মানুষের মধ্যে হৃদ্রোগ হওয়ার প্রধান কারণ জিনগত বলে উল্লেখ করেছেন প্রখ্যাত হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ দেবী প্রসাদ শেঠি।
চট্টগ্রামে ইমপেরিয়াল হাসাপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে গতকাল শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ভারতের নারায়ণা হেলথের চেয়ারম্যান শেঠি এই মন্তব্য করেন। এর আগে সকালে খুলশী এলাকায় ৩৭৫ শয্যা বিশিষ্ট ইমপেরিয়াল হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দেবী শেঠি।
সাংবাদিকদের শেঠি বলেন, ইউরোপে হৃদ্রোগ হয় অবসরকালীন সময়ে। অর্থাৎ ষাট বছরের পর। আর ভারত, বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের মানুষের হৃদ্রোগ হয় তরুণ বয়স থেকে। এর প্রধান কারণ জিনগত। এখানকার মানুষের জীবনধারা, খাদ্যাভাস, ধূমপান, ডায়াবেটিস হৃদ্রোগের জন্য দায়ী।
বক্তব্যে এবং মতবিনিময়কালে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চট্টগ্রামে হৃদ্রোগের আধুনিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শেঠি বলেন, ‘ইমপেরিয়াল হাসপাতালে নারায়ণা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ দল কাজ করবে। মাঝেমধ্যে আমিও আসব। আশা করি, এখানকার মানুষ আধুনিক চিকিৎসা পাবে। বিদেশমুখী কমবে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটা একই উল্লেখ করে দেবী শেঠি বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা এক। তারপরও কিছু লোক বাইরে যাচ্ছে বিকল্প ব্যবস্থার কারণে। ভারতে অনেকগুলো একই ধরনের হাসপাতাল রয়েছে। মানুষ বিকল্প বেছে নিতে পারছে। এখানে হয়তো এখনো সেভাবে বেশি বিকল্প তৈরি হয়নি।
দেবী শেঠি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মানুষ রোগ হওয়ার পর চিকিৎসকের কাছে যায়। কেন সুস্থ থাকার সময় যাবে না? সুস্থ থাকার সময়ও চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সবকিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখতে হবে কতটা সুস্থ রয়েছি আমি।’ ভারতের কলকাতাসহ চিকিৎসকদের সাম্প্রতিক আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেবী শেঠি বলেন, ‘ভালো চিকিৎসার জন্য এখানকার মানুষ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। এই হাসপাতালের কারণে এই প্রবণতা কমবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংসদ মোশাররফ হোসেন, ইমপেরিয়াল হাসপাতালের বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল হোসেন, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, কনসালটেন্ট এল ডি হ্যানসন প্রমুখ বক্তব্য দেন। উদ্বোধনের আগে দেবী শেঠি হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। হাসপাতালটিতে ১৪টি অস্ত্রোপচার কক্ষ, ৫৮ সিসিইউ শয্যা, ৪৪ শয্যার নবজাতক ওয়ার্ডসহ চিকিৎসার আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ৬ লাখ ৬০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই হাসপাতাল রোগীর নিরাপত্তা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়কে প্রাধান্য দেবে বলে রবিউল হোসেন জানান। নারায়ণা হেলথের সঙ্গে যৌথভাবে এখানকার হৃদ্রোগ বিভাগ পরিচালিত হবে।