উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে আরসার হামলা, দুই রোহিঙ্গা নেতা গুলিবিদ্ধ
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসীদের হামলা ও গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন ক্যাম্পের মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) মো. হোসেন ও নুর বশর।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুতুপালং (ক্যাম্প-২) আশ্রয়শিবিরের সি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ দুই রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের অভ্যন্তরে এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কী কারণে আরসার সন্ত্রাসীরা দুই রোহিঙ্গাকে গুলি করেছে, তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি।
তবে সাধারণ রোহিঙ্গা বলছেন, রোহিঙ্গাদের শীর্ষনেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পের ভেতরে আরসার তৎপরতা সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নানা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে আসছিলেন এই দুই রোহিঙ্গা। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত দুই মাসে বেশ কয়েক আরসা সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ কারণে আরসা অনেক রোহিঙ্গাকে টার্গেট করে রাখে।
আরসার সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হওয়ার সত্যতা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক। তিনি বলেন, গুলিতে গুরুতর আহত ক্যাম্পের নেতা মো. হোসেন প্রকাশ কালা বদা ও নুর বশর আশ্রয়শিবিরের এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে কী কারণে দুই রোহিঙ্গার ওপর আরসা হামলা চালিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আরসার সন্ত্রাসীদের ধরতে ক্যাম্পে অভিযান চালানো হচ্ছে।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক রোহিঙ্গা জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে কুতুপালং ক্যাম্প-২ পশ্চিম আশ্রয়শিবিরের সি ব্লকের একটি গলিতে কয়েক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলছিলেন উপমাঝি মো. হোসেন প্রকাশ কালা বদা। এ সময় ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মো. হোসেনের ওপর হামলা চালায় এবং কয়েকটি গুলি করে।
সন্ত্রাসী দলের নেতৃত্ব দেন ওই ক্যাম্পের আরসার কমান্ডার মৌলভি মিজানুর রহমান। হামলার সময় মিজানের পরনে ছিল লুঙ্গি ও হাফ গেঞ্জি। এ সময় সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কয়েক রোহিঙ্গাদের ধাওয়া করে এবং কোপাতে থাকে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাঝি মো. হোসেন মাটিতে লুটে পড়েন। এ ছাড়া গুলি চালিয়ে আহত করার পর নুর বশরকে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং গুরুতর আহত দুই রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান।