ঈশ্বরগঞ্জে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে পিকআপের ধাক্কায় প্রাণ গেল ছাত্রীর
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে পিকআপের ধাক্কায় মাসতুরা আক্তার (১৮) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রী নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের মাইজবাগ বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ দিকে ‘পাওয়ার সিমেন্ট ব্লক অ্যান্ড ব্রিকস’ কারখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মাসতুরা উপজেলার মাইজবাগ গ্রামের বাসিন্দা মো. ফরিদ মিয়ার মেয়ে এবং বাড়ির পাশের ফাতেমা তুজ জোহরা কওমি মহিলা মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের মাইজবাগ বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ দিকে ‘পাওয়ার সিমেন্ট ব্লক অ্যান্ড ব্রিকস’ কারখানার সামনে যাওয়ার পর দ্রুতগতির একটি পিকআপ মাসতুরাকে ধাক্কা দিয়ে পাশে রাখা করাতকলের কাঠের স্তূপে সঙ্গে চাপা দেয়। পিকআপ ও কাঠের স্তূপের মাঝখানে চাপা পড়ে মাসতুরা গুরুতর আহত হন। তখন আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
সরেজমিনে মাসতুরার বাড়িতে দেখা যায়, ঘরের ভেতর থেকে ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। উঠানে প্রতিবেশীদের ভিড়। উঠানের এক কোণে ত্রিপল দিয়ে ঘিরে চলছে লাশের গোসল দেওয়ার কাজ। মাসতুরার সহপাঠীরা শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে এসেছেন। তাঁরা জানান, মাসতুরা মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তিনি দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় ছিলেন। সরকার দাওরায়ে হাদিস বিষয়কে মাস্টার্সের সমমানের স্বীকৃতি দিয়েছে। পাস করলে তিনি পরিবারের জন্য কিছু করতে পারতেন। তাঁর পরিবারের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
মাসতুরার বোন মরিয়ম আক্তার জানায়, বাড়ি থেকে সড়কে ওঠার আগেই পিকআপটি মাসতুরাকে ধাক্কা দেয়। মো. সাইম উদ্দিন (৫০) নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মহাসড়কের পাশে করাতকলের গাছের গুঁড়ি ও কাঠের স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পিকআপটি মাসতুরাকে ধাক্কা দিয়ে কাঠের স্তূপের সঙ্গে চাপা দেয়। সেখানে কাঠের স্তূপ না থাকলে হয়তো মেয়েটি প্রাণে বেঁচে যেত।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের মিয়া মুঠোফোনে বলেন, চালককে আটক করা হয়েছে। তাঁর নাম দীন ইসলাম (৩৫)। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা। এ ঘটনায় ছাত্রীর পরিবার মামলা করতে চাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন বলে জানান।