ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলার ঘটনায় আরেক যুবলীগ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় যুবলীগের এক নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
যুবলীগের ওই নেতার নাম মাসুদ রানা (৪০)। বাবার নাম গোলাম মোস্তফা। তিনি ঘোড়াঘাটের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। তাঁকে নিজ এলাকা সিংড়া ইউনিয়ন থেকে আজ শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রংপুর নিয়ে যায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এর আগে হামলায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতাকে আটক করা হয়। হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
সবশেষ আজ বেলা দুইটার দিকে নবীরুল ইসলাম (৩৮) নামে একজনকে আটক করা হয়। তিনি পেশায় রংমিস্ত্রি। তাঁর কাছ থেকে একটি হাতুড়ি জব্দ করা হয়েছে। তাঁকে ঘোড়াঘাট উপজেলা সংলগ্ন চক বামনদিয়া বিশ্বনাথপুর গ্রাম থেকে আটক করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার আহত ইউএনও ও তাঁর বাবাকে উদ্ধারের পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশকে (২৬) নিয়ে যায়।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে নৈশপ্রহরী গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
এই হামলার ঘটনায় আজ ভোরে দুজনকে আটক করা হয়। একজন ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুর সাগরপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৪২)। অন্যজন একই উপজেলার রানীগঞ্জ কষিগারি এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আসাদুল ইসলাম (৩৫)।
জাহাঙ্গীর ২০১৭ সাল থেকে ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর-৬ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ শিবলী সাদিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার মধ্যরাতে ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে দুর্বৃত্তরা তাঁর শয়নকক্ষে ঢুকে পড়ে। এর আগে দুর্বৃত্তরা ওই বাসভবনের নিরাপত্তাপ্রহরীকে বেঁধে প্রহরীকক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখে। ইউএনওর বাবা ওমর আলী (৬০) প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। কিন্তু গতকাল সকালে তিনি হাঁটতে বের না হওয়ায় সঙ্গীরা তাঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য বাসভবনে যান। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
পরে পুলিশ গিয়ে ইউএনও, তাঁর বাবা ও প্রহরীকে উদ্ধার করে। আহত বাবা-মেয়েকে গতকাল সকালে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন। ওয়াহিদার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।