আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ, শ্রমিকদের লাঠিপেটা
আশুলিয়ার ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) একটি কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল করার সময় তাঁদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ ও আনসার বাহিনী।
আজ সোমবার সকালে ডিইপিজেডের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। পরে তাঁরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিইপিজেডের ভেতরে এ ওয়ান নামে একটি পোশাক কারখানা গত এপ্রিল মাসে বন্ধ হয়ে যায়। কারখানা বন্ধ হওয়ার পর থেকে ওই কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছিলেন। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শ্রমিকেরা ডিইপিজেডের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে শিল্প পুলিশ ও কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে এবং লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় তাদের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
কয়েকজন শ্রমিক বলেন, এপ্রিল মাসে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তাঁদের বেতনসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ না করায় তাঁরা নিয়ম অনুযায়ী চলতি মাস পর্যন্ত বেতন পাবেন। ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিয়ে তাঁদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করছে না। বেতন-ভাতার দাবি জানালে তাঁদের পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করা হয়।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ভাষ্য, সকালে তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলেন। এরপরও পুলিশ ও ডিইপিজেডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার বাহিনীর সদস্যরা বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর হামলা চালান। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে। এতে অন্তত ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুস সোবাহান বলেন, বন্ধ কারখানাটি বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ নিলাম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে কারখানাটি নিলাম করা সম্ভব হয়নি। নিলাম বন্ধে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বিক্রির চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ডিইপিজেডের পক্ষ থেকে কারখানাটি বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে। কারখানা বিক্রি করা হলে নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও ভাতা পরিশোধ করা হবে।
শ্রমিকদের ওপর পুলিশ ও আনসারদের হামলার বিষয়ে জি এম আবদুস সোবাহান বলেন, শ্রমিকেরা ডিইপিজেডের সামনে অবস্থান নেওয়ার পর কয়েকজন কর্মকর্তা তাঁদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় বেশ কিছু শ্রমিক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। হামলা ও আহত হওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।
শিল্প পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার সানা শামীনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভ-মিছিলের সময় শ্রমিকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আনসার সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে শ্রমিকেরা সড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে।