দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে সদ্য চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেছেন, তিনি অন্যায়ের শিকার। তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আজ বৃহস্পতিবার তিনি প্রথম আলোকে এই কথা বলেন।
শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘আমি এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি রাষ্ট্রের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি অন্যায়ের শিকার, জুলুমের শিকার। আমি সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’
গতকাল বুধবার দুদক কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০০৮–এর ৫৪(২) বিধি অনুযায়ী দুদক চেয়ারম্যান মো. মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করেন। তিনি সর্বশেষ পটুয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে পটুয়াখালীতে মানববন্ধন করেছেন তাঁর সহকর্মীরা। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটুয়াখালীর কলাতলা এলাকায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন তাঁর সহকর্মীরা। মানববন্ধনে দুদক কর্মচারী আইন ৫৪(২) ধারাকে বিতর্কিত আইন দাবি করে, এটি বাতিলসহ শরীফ উদ্দিনকে চাকরিতে বহালের দাবি জানান জেলা দুদক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাঁরা বলছেন, শরীফ উদ্দিন সৎ ও সাহসী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে সারা দেশে তাঁর সমকর্মীরা প্রতিবাদ করছেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামে কর্মরত অবস্থায় কক্সবাজারে ৭২টি প্রকল্পে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, রোহিঙ্গাদের ২০টি এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মামলা করেন। এতে তিনি অনেকের ‘চক্ষুশূল’ হয়ে উঠেছিলেন। গত বছরের ১৬ জুন তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়।
চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, পেট্রোবাংলার একটি প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে কাজ করতে গিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার হুমকি পান। বিষয়টি তিনি অধিদপ্তরকে জানিয়েছিলেন।
শরীফ উদ্দিন বলেন, পটুয়াখালীতে বদলি হলেও তাঁর পরিবার চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকে। তিনি ছুটিতে পটুয়াখালী থেকে চট্টগ্রামে যেতেন। পটুয়াখালীতে বদলির পরও তাঁকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। হুমকি পেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় তিনি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।