জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও এক শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ রোববার সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁরা প্রশাসনিক ভবন ও কলা অনুষদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এবার নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে। গত শুক্রবার রাতে নির্যাতনের শিকার হন সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাগর চন্দ্র দে। সাগরের সহপাঠীরা অভিযোগ করেন, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহান তাঁকে মারধর ও নির্যাতন করেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় সাগরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে মারধর করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের চার কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই চারজনসহ মোট আটজনের হলের আসন বাতিল করা হয়েছে।
একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো সম্মান করে না—এমন অভিযোগে সাগর চন্দ্র দেকে জোর করে গত শুক্রবার রাতে অগ্নিবীণা হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে নেওয়া হয়। তাঁকে একটি রোলিং চেয়ারে (ঘূর্ণমান চেয়ার) বসিয়ে বারবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে দোল দেওয়া হতে থাকে। একপর্যায়ে সাগর চেয়ার থেকে পড়ে যান। এতে তাঁর একটি দাঁত ভেঙে যায়। নির্যাতন শেষে সৌমিক জাহান এ ঘটনা কাউকে না জানাতে হুমকি দেন।
এ বিষয়ে জানতে সৌমিক জাহানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
গতকাল সন্ধ্যায় আহত সাগরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিয়ে বিচারের দাবি করেন। বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনিক ভবন ও কলা অনুষদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। বেলা দুইটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সেখানেই ছিলেন। এ ছাড়া সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন।
এ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, সাগর চন্দ্র দে নামের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় অগ্নিবীণা হলের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও তদন্ত শুরু করবে।