গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর চার দফা দাবি জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন এসব দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল রাজু, আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম, সফিকুল ইসলাম ও কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম।
দাবিগুলো হলো—শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে জনসমক্ষে তাঁদের নাম–পরিচয় প্রকাশ করা ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় লোকজনকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ক্যাম্পাসে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করা এবং সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া।
আজ বিকেল চারটার মধ্যে দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে আন্দোলনকারীরা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচি ও সন্ধ্যা ছয়টায় মশাল মিছিল করবেন বলে জানান।
শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হবে আজ বিকেল চারটায়। এ সময়ের মধ্যে প্রশাসন জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও জনসমক্ষে আনতে ব্যর্থ হলে আন্দোলনকারীরা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচি ও সন্ধ্যা ছয়টায় মশাল মিছিল করবেন বলে জানান।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব এক সভায় মিলিত হন। পরে সেখান থেকে তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব, আইন অনুষদের ডিন রাজিউর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান ও শিক্ষক সমিতির প্রচার সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন।
উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ধর্ষণকারী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছেন তিনি। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে তাঁরা এর বিচার আদায় করবেন। শিক্ষার্থীদের সব ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা বর্জন করে ক্যাম্পাসের মধ্যে থেকে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করার অনুরোধ জানান তিনি। বিচার না হওয়া পর্যন্ত লেখাপড়ার পাশাপাশি তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মামলার বিষয়ে এখনই কিছু বলব না। আপনারা একটু ধৈর্য ধারণ করুন, আপনাদের ভালো খবর দেব।’