সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি ভেঙে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইলেন সংরক্ষিত আসনের সাংসদ শামীমা আক্তার খানম। আজ রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ইউনিয়নের রাজাপুর মধ্য বাজারে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে জয়ী করার আহ্বান জানান।
মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাংসদ শামীমা আক্তার খানম কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন।
পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সেলিম রাজা চৌধুরী।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীমা আক্তার খানম বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যেহেতু এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রতীক নেই, তাই আসুন উন্নয়নের স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে সেলিম রাজা চৌধুরীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী করি।’
বক্তব্যের একপর্যায়ে এলাকার কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন বোরো মৌসুম চলছে। কৃষিকাজের সময়। তাই ৫ জানুয়ারি ইউপি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সকাল সকাল গিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিম রাজাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে কাজে চলে যাবেন। আপনারা তাঁকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। সবাই মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আসুন সবাই মিলে স্বাধীন এই দেশটাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।’
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম এই সভায় সভাপতিত্ব করেন। ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য শাহাজুল ইসলামের সঞ্চালনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান, ধরমপাশা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম আহম্মেদ, সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন খান প্রমুখ।
সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউপি নির্বাচনে রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মাহমুদ হাছান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৬–এর ২২ (১) অনুযায়ী, কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্বাচন–পূর্ব সময়ে নির্বাচনী প্রচারণাসহ নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো কাজে নির্বাচনী এলাকায় অংশ নেওয়ার বিধান নেই। সাংসদ অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এ ক্ষেত্রে কোনো সাংসদ এমনটি করে থাকলে সেটি সম্পূর্ণ বিধিমালা পরিপন্থী।
এ বিষয়ে সাংসদ শামীমা আক্তার খানমের মুঠোফোনে কয়েক দফায় একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। তবে সাংসদ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে জয়ী করার জন্য এলাকাবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।