অভিভাবকশূন্য পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা ঝুলছেই
উপাচার্য নেই। সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদও শূন্য। আজ সোমবার তৃতীয় দিনের মতো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রহ্ম ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছেন। ফলে ক্যাম্পাস এখন অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
নির্ধারিত রিজেন্ট বোর্ড না করে ১০২ জনের নিয়োগপ্রক্রিয়া ও পদোন্নতি ঝুলিয়ে রেখে উপাচার্য এম রোস্তম আলী মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে চুপিসারে ক্যাম্পাস ছাড়েন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদ রেজিস্ট্রারকে কার্যালয় থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পাশাপাশি তারা ১৭ দফা দাবি তুলে ধরেছে। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিষদের নেতারা।
আজ সকালে সরেজমিন ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে, তৃতীয় দিনের মতো রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের একই অবস্থা। কার্যালয়ে ঢোকার প্রধান ফটক তালাবদ্ধ। প্রশাসনিক ভবনের বারান্দায় ঘুরছেন কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বসে আছেন জনসংযোগ দপ্তরে।
ক্যাম্পাসের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা বলেন, কার্যালয়ে তালা ঝোলানোর পরে রেজিস্ট্রার এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করছেন। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা না থাকায় তিনি নিশ্চুপ হয়ে আছেন। তবে প্রতিদিন যথাসময়ে ক্যাম্পাসে আসছেন তিনি। দিনভর ঘুরেফিরে চলে যাচ্ছেন।
কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য কথা দিয়ে কথা রাখেননি। তিনি সবকিছু ঝুলিয়ে রেখে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেছেন। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা ১৭ দফা দাবি জানিয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকবে।’
এ বিষয়ে বিজন কুমার ব্রহ্ম প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় নেই। বেশ কিছুদিন ধরে সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদও শূন্য। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতিতে খুব অসহায় বোধ করছি। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হলে কীভাবে ক্যাম্পাস চলবে, সেটা নিয়েও চিন্তিত আছি।’
আগামী ৬ মার্চ উপাচার্যের দায়িত্বকালের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। এর আগে তিনি ১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৬০তম সভা ডাকেন। সভায় ৬১টি আলোচ্য সূচির মধ্যে ৪২টি ছিল নিয়োগসংক্রান্ত। এতে ১০২ জনের নিয়োগপ্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। নিয়োগসংক্রান্ত জটিলতায় তিনি সভা স্থগিত করেন। পরে তিনি নিজেই ২৪ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের সভা ডেকে ক্যাম্পাস ছাড়েন। এর ১৩ দিন পর ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর দুই দিন ক্যাম্পাসে থেকে তিনি ক্যাম্পাস ছাড়েন।