অবশেষে কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএর কাছে

নৌ চলাচল
ফাইল ছবি

দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের পরিচালনাধীন কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটের নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কাছে। এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থার পরিচালনাধীন দেশের ২৩টি ফেরিঘাটের পরিচালন, ইজারাসহ নানা বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল।

এ বিরোধ মেঠাতে ১০ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিআইডব্লিউটিএর কাছে ঘাট পরিচালনা, ইজারাসহ সব দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিআইডব্লিউটিএর কাছে ঘাট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া ঠিক করার জন্য ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংস্থা-১) এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকীকে।

এ বিষয়ে সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সব ঘাট চলে যাবে বিআইডব্লিউটিএর কাছে। বিনিময়ে জেলা পরিষদকে কী দিতে হবে, তা ঠিক করতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। তাঁরা বৈঠক করে দ্রুত একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। কমিটি গঠনের ১৭ দিন পার হলেও এখনো কোনো সভা করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কমিটির সদস্যসচিব নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (টিএ) মোহা. আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী, ঘাট পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ থাকবে বিআইডব্লিউটিএর কাছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগকে কী পরিমাণ রাজস্ব দিতে হবে, তা নির্ধারণ করা তাঁদের কমিটির কাজ। এ ছাড়া দুই সংস্থার মধ্যে কোন ঘাটে কী সমস্যা আছে, কোথায় মামলা রয়েছে—এসব বিষয় পর্যালোচনা করে তা নিরসন করা হবে। কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন বিভাগের হওয়ায় এখনো তাঁরা কোনো সভা করতে পারেননি।

জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের সঙ্গে সন্দ্বীপে যাত্রী পারাপারের সাতটি ঘাট আছে। এর মধ্যে ছয়টিই সীতাকুণ্ডের সঙ্গে। পাঁচটি ঘাট ইজারা ও দুটি খাস কালেকশনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করছে জেলা পরিষদ।

বিআইডব্লিউটিএ চট্টগ্রামের উপপরিচালক নয়ন চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, নীতিমালা অনুসারে দরপত্রের মাধ্যমে তাঁদের মালিকানাধীন সব ঘাটের ইজারা দেওয়া হয়। এ ইজারা হয় এক বছরের জন্য। এতে বিরোধপূর্ণ ঘাটগুলোর ভাড়া অনেকাংশে কমে যাবে। আর যাত্রীসেবার মান বেড়ে যাবে। ইজারাদার বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি ছাড়া অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘাটের ভাড়া বাড়াতে পারবেন না। লাভবান হবেন সাধারণ যাত্রীরা।