মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিনের আয়োজনে এক রেডিও অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, শিশু-কিশোরদের মানসিক গঠনে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সম্প্রীতি এবং বহুত্ববাদের চর্চা হলে সমাজ ও রাষ্ট্রে সহনশীলতার পরিবেশ তৈরি হবে। এ জন্য আলোচকেরা অভিভাবক ও শিক্ষকদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান।
গতকাল বুধবার মৌলভীবাজারে কমিউনিটি রেডিও পল্লিকণ্ঠে ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা অনুষ্ঠান সরাসরি প্রচারিত হয়। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক এই রেডিও পরিচালনা করে।
অনুষ্ঠানে আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, অনলাইনে অপতথ্য, ভুয়া খবর ও ঘৃণা বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ব্যাপকতা সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার জানার পাশাপাশি মতপ্রকাশ, যার যার ধর্মবিশ্বাস ও রাজনৈতিক বিশ্বাস প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সম্প্রীতির মনন গঠনে পারিবারিক শিক্ষা ও বিদ্যায়তনিক পরিবেশও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে নাগরিক টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক শাহনাজ শারমীন বলেন, ‘মূলধারার গণমাধ্যমে অবাধ তথ্যপ্রবাহ না থাকলে সামাজিক যোগাযোগমাধমে গুজব ছড়াবেই। সঠিক তথ্য যথাসময়ে প্রকাশ হলে সহিংসতা ও উসকানির অনেক ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মাধুরী মজুমদার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় উৎসবসংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানে সব ধর্মের শিক্ষার্থীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে অন্য ধর্ম সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
তরুণ সংস্কৃতিকর্মী ডোরা প্রেন্টিস বলেন, বর্তমানে ইন্টারনেট ধর্মভিত্তিক আক্রমণের পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক আক্রমণের ঘটনাও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। দেশীয় সংস্কৃতিচর্চায় তরুণ সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে এসব আক্রমণ কমে আসবে বলে মত দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আলোচকদের পাশাপাশি ফেসবুকে প্রচারিত লাইভে কমেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন দর্শক-শ্রোতারা।