বালু ব্যবসা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতার দ্বন্দ্বের জেরে দুজনের ওপর হামলা
রাজবাড়ীতে বালু ব্যবসা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতার দ্বন্দ্বের জেরে দুই যুবকের ওপর হামলা চালিয়ে হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সূর্যনগর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুজন হলেন মো. আবদুল হান্নান শেখ (৪০) ও সাগর আহমেদ ওরফে আলিম (৩৫)। হান্নানের বাড়ি মিজানপুর ইউনিয়নের দয়ালনগর গ্রামে। তিনি মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বালু ব্যবসায়ী। অপরজন আলিমের বাড়ি কালীনগর গ্রামে। তিনি কালীনগর গ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বালু ব্যবসায়ী মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান টুকু মিজি ও জেলা পরিষদের সদস্য আজম মণ্ডলের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। টুকু মিজি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আজম মণ্ডল একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। কয়েক মাস আগে তাঁদের অনুসারীদের মধ্যে কয়েক দফা হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পাল্টাপাল্টি মামলাও করা হয়। এ বিষয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতেও আলোচনা হয়। পরে উভয় পক্ষে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
সাগর আহমেদ বলেন, তাঁর সঙ্গে টুকু মিজির ভালো সম্পর্ক। প্রতিপক্ষের লোকজন কয়েকবার তাঁকে পক্ষ ত্যাগ করতে বলেন। তিনি রাজি হননি। গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তাঁরা দুজন সূর্যনগর বাজারে চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় ১০ থেকে ১২ জন অতর্কিত হামলা করেন। তাঁদের হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁদের রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ইউপি চেয়ারম্যান টুকু মিজি বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য এই হামলা করা হয়েছে। হামলায় আহত ব্যক্তিদের প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাঁদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে হান্নানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজম মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আহত ব্যক্তিরা ইয়াবা সেবন করেন। ইয়াবা সেবন করার সময় স্থানীয় লোকজন তাঁদের গণপিটুনি দিয়েছে বলে শুনেছি।’
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আহত ব্যক্তিদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে হাতুড়ির আঘাত বেশি গুরুতর।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, হামলার ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হামলাকারীরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।