পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ষষ্ঠ দিনের উদ্ধার অভিযানে দুটি সাইকেল ও একটি হলুদ রঙের শাড়ি উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও ডুবুরিরা। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে নৌকাডুবির স্থান থেকে প্রায় ৪০০ গজ দক্ষিণ দিক থেকে সাইকেল ও শাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে আজ ভোর সাড়ে পাঁচটায় নিখোঁজ তিনজনের সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা করতোয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। তবে বেলা দুইটা পর্যন্ত নিখোঁজ ব্যক্তিদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উদ্ধার অভিযান বন্ধ করেন ফায়ার সার্ভিসের রংপুর, রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের ডুবুরিরা।
সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর থেকে আর কোনো লাশ উদ্ধার করা হয়নি। এ নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯। তবে নিখোঁজ তিন ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী, নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ তিনজন হলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত-কাজলদিঘী ইউনিয়নের ঘাটিয়ারপাড়া এলাকার শিশু জয়া রানী (৪), দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিডোবা-ছত্রশিকারপুর এলাকার ভূপেন্দ্র নাথ বর্মণ (৪২), বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার সুরেন্দ্র নাথ বর্মণ (৬৫)।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন থেকে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ১২টি দলে বিভক্ত হয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে তাঁদের ৭০ জন সদস্য কাজ করছেন। করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে দিনাজপুরের আত্রাই নদ পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ উদ্ধার অভিযান চলছে। এখনো নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এ উদ্ধার অভিযান চলবে। ঘটনার দিন ওই নৌকায় ১০৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে তদন্ত করে জানতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ছয়জন সাঁতরে পাড়ে উঠেছিলেন, ২৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনো ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের সদস্য পজিরুল ইসলাম বলেন, ‘পানির নিচে উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় একটি সাইকেলের চাকা আমার পায়ে লাগে। পরে আমাদের উদ্ধারকারী দলের অন্য সদস্যরাসহ আমরা সেখান থেকে দুটি সাইকেল উদ্ধার করি। এ ছাড়া সেখান থেকে কিছুটা দূরে একটি হলুদ রঙের শাড়ি উদ্ধার করি। সম্ভবত, সাইকেলসহ যাত্রীরা নৌকায় উঠেছিলেন। আর উদ্ধার হওয়া শাড়িটি যাত্রীদের মধ্যে কোনো নারীর পরনে ছিল বলে মনে হচ্ছে।’
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক শেখ মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আজ ভোর থেকে নিখোঁজ তিনজনের সন্ধানে অভিযান আবারও শুরু হয়েছে। তবে বেলা ১১টার দিকে দুটি বাইসাইকেল ও একটি শাড়ি পাওয়া গেছে।