মুন্সিগঞ্জে ইটভাটা দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ১০ জন টেঁটাবিদ্ধ
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় একটি ইটভাটা দখল করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি-বালুচর গ্রামে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সংর্ঘষ চলে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ জন টেঁটাবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পক্ষ দুটি হলো বালুচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নাসির মোল্লা এবং একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সদস্য নুরু বাউল।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্য বিস্তার এবং মোল্লাকান্দি এলাকায় একটি ইটভাটা দখল করা নিয়ে নাসির মোল্লা ও আলেক চান মুন্সি পক্ষের সঙ্গে একই ইউনিয়নের নুরু বাউল-শহীদ বাউল পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। গত কয়েক দিন এ নিয়ে পক্ষ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। গত বুধবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে মোল্লাকান্দিদের ওপর হামলা চালান বাউল পক্ষের অনুসারীরা। এ সময় মোল্লা ও মুন্সি বংশের লোকজন একত্র হয়ে পাল্টা হামলা শুরু করেন।
একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন একে অপরকে লক্ষ্য করে টেঁটা ও ইটের খোয়া নিক্ষেপ করেন। এতে নাসির পক্ষের মিসু মোল্লা (২০), করিম মুন্সি (৩৫), কবির মুন্সি (৪০), রকিব মুন্সি (৪৫), জাকারিয়া (২০), রিপা আক্তার (৩৫) ও জামিনা বেগম (৫০) এবং নুরু বাউল পক্ষের ছাব্বির হোসেন (১৯), শহিদ বাউল (৫০), মিঠুন বাউল (৩৫) টেঁটাবিদ্ধ হন। সব মিলিয়ে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানান কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা চলছে।
এ বিষয়ে বালুচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নাসির মোল্লা বলেন, ‘ইটভাটাটি সম্পূর্ণ আমাদের ছিল। সেটি জোর করে দখল করতে চেয়েছিল নুরু বাউলরা। প্রশাসন বিচার সালিস করে দিয়েছিল। আমরা সেটি মেনে নিয়েছিলাম। সম্পূর্ণ দখল করতে না পারায় তারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা করে। আটটি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। আমাদের সাতজনকে টেঁটাবিদ্ধ করেছে। গুরুতর অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নুরু বাউল। তিনি বলেন, ইটভাটা নিয়ে নয়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে নাসির মোল্লারাই তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। নুরুর দাবি, হামলায় তাঁদের ৫ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। পাঁচটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানিয়ে মুন্সিগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। তবে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর শুনেছি। তাঁরা গ্রেপ্তার এড়াতে লুকিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’