পুলিশ সুপারের কাছে মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে কাঁদলেন মা–বাবা

নিহত গৃহবধূ ফারজানাছবি সংগৃহীত

মেয়ের হত্যাকারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন শেষে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েও কাঁদলেন মা–বাবা ও ভাই। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে নিহত ফারজানা আক্তারের (২২) মা–বাবা, ভাইসহ স্বজনেরা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা এ সময় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের আকুতি জানান। তখন পুলিশ সুপার দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের চরকলমি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের বড় ছেলে জহিরুল ইসলামের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের চর বৈশাখী গ্রামের বশির উল্যাহর মেয়ে ফারজানার বিয়ে হয়। ১৩ জুন ফারজানা স্বামীর মুঠোফোনে অন্য এক নারীর সঙ্গে জহিরুলের ছবি দেখে প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করেন জহিরুল। পরিবারের দাবি, স্বামীর মারধরেই ফারজানার মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই দিন রাতে ফারজানার লাশ উদ্ধার করে।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গৃহবধূ ফারজানার খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন। আজ বেলা এগারোটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো।

নিহত ফারজানার বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘এ ঘটনায় তাঁরা আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি পরবর্তী সময়ে থানায় হত্যা মামলা হিসেবে রুজু হয়। মামলায় ফারজানার স্বামী জহিরুলসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পার হতে চললেও পুলিশ এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশ উল্টো আমাদের মামলার আসামিদের খুঁজে দিতে বলেছে। তাই মেয়ের হত্যাকারী ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে আজ এই মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন।’

পুলিশ ‍সুপারের কাছে মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে গিয়ে কাঁদলেন নিহত ফারজানার ভাই, বাবা ও মা (বায়ে)। আজ বেলা সাড়ে এগারোটায় নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো।

মানববন্ধনে ফারজানার বাবা বশির উল্যাহ, মা জহুরা বেগম ও ভাই খবির উদ্দিন ছাড়া অংশ নেন নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন, নৃবিজ্ঞানী ও লেখক রেহনুমা আহমেদসহ নারী অধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই ফারজানার খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন।

মানববন্ধন শেষে নারী অধিকার কর্মীদের নেতৃত্বে ফারজানার বাবা, মা, ভাইসহ স্বজনেরা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় মেয়ের হত্যাকারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে গিয়ে তাঁরা কেঁদে ফেলেন। পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান তাৎক্ষণিক মামলাটির তদন্ত জেলা গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর ও অভিযুক্ত আসামিদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।