কুড়িগ্রামে নদীকর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার

আশিকুর রহমান (বাঁয়ে), ইলিয়াছ আলী মণ্ডল (মাঝে) ও একরামুল হক।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় প্রবীণ নদীকর্মী নজির হোসেনের (৮০) ওপর হামলা ও অন্য দুই নদীকর্মীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে উপজেলার ছাটমল্লিকবেগ বোতলাতপাড় এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন রাজারহাট উপজেলা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশিকুর রহমান, ছাটমল্লিকবেগ পশ্চিমপাড়া এলাকার ইলিয়াছ আলী মণ্ডল (৬৫) ও তাঁর ছেলে মো. একরামুল হক (৩৮)। তাঁদের মধ্যে আশিকুরকে নদীকর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এবং ইলিয়াছ আলী ও তাঁর ছেলেকে প্রবীণ নদীকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলা সদর ইউনিয়নের বোতালারপাড় গ্রামে আঙ্গাধোয়া ব্রিজপাড় এলাকায় প্রবীণ নদীকর্মী নজির হোসেনের ওপর হামলা করে তাঁর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। নজির হোসেন চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির সদস্য।

অন্যদিকে গত সোমবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উত্তম কুমার রায় চাকিরপশার এলাকা পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় নদীকর্মী লিপি বেগম ও মোস্তফা জামানকে মারধরের হুমকি দিয়েছিলেন উপজেলা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশিকুর রহমানসহ কয়েকজন। এ ঘটনায় লিপি বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আশিকুরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাজারহাটের চাকিরপাশা বিলের দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার দখলদারের লোকজন নদীকর্মীর ওপর হামলা করে আহত করেছিলেন। ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আবার কেউ এ বিষয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, বিগত সরকারের আমলে নদী দখলদারদের বিপক্ষে কথা বললে ছাত্রলীগ, যুবলীগ হামলা করত। এখন বিএনপি হামলা করে। গতকাল একজন নদীকর্মীকে মারধর করে আহত করা হয়। এক দিনের ব্যবধানে পুলিশ হামলাকারী দখলদারদের গ্রেপ্তার করেছে। এতে নদীকর্মীরা আশান্বিত হয়েছেন। তাঁরা যেন আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।