ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় সংঘর্ষ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী মেডিকেল কর্তৃপক্ষের মামলা নিয়েছে পুলিশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এস জে এম শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা নিয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে করা পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. রফিকুল আলম আজ রোববার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল রাত ১২টার আগে–পরে দুটি অভিযোগ মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এখন এ বিষয়ে তদন্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের অবহেলা ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সালাম নগরের রাজপাড়া থানায় অভিযোগ করেন। এতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স ও আনসার সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আর গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষে অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন। অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
গত বুধবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এস জে এম শাহরিয়ার হলের তৃতীয়তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। এরপর দ্রুত তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। রাত ১২টা থেকে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। পাঁচ সদস্যের অপর কমিটিতে শুধু হাসপাতালের লোকজন আছেন। এদিকে হাসপাতালে সংঘর্ষের ঘটনা এবং শিক্ষার্থীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া শহীদ হবিবুর রহমান হলের উপর থেকে শাহরিয়ার কীভাবে পড়ে গেল, তা তদন্তে হল প্রশাসন অভ্যন্তরীণ তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।