সিলেটে ২৩ দিন পর পাথর আমদানি শুরু

‌সিলেটের তামা‌বিল স্থলবন্দর
ফাইল ছ‌বি

সিলেটে ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর পাথর আমদানি শুরু হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিক থেকে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি শুরু হয়।

এর আগে শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে ৭ জানুয়ারি থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রাখেন আমদানিকারকেরা। গতকাল মঙ্গলবার আমদানিকারক সংগঠনের নেতারা এবং কমিশনার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট সিলেট কমিশনারেটের সঙ্গে যৌথ মতবিনিময় সভা হয়। সভা শেষে বুধবার থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি করার সিদ্ধান্ত হয়।

আমদানিকারকেরা জানান, তাঁরা প্রতি টন পাথর ও চুনাপাথর ৮-১০ ডলারে আমদানি করতেন। এই পাথরের ২০-৩০ শতাংশ নিম্নমানের থাকায় তা ফেলে দিতে হয়। গত বছরের জুলাই পর্যন্ত এনবিআর আমদানি মূল্য বাড়িয়ে পাথরে ১১ ডলার ও চুনাপাথর সাড়ে ১১ ডলার করে। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদের পর ৭৫ সেন্ট বৃদ্ধি করে নতুন অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু দাঁড়ায় পাথরের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৭৫ ডলার ও চুনাপাথরের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ২৫ ডলার।

এরপর ৪ জানুয়ারি আবারও অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১ দশমিক ২৫ ডলার বৃদ্ধি করে পাথরের ক্ষেত্রে ১৩ ডলার ও চুনাপাথরের ক্ষেত্রে ১৩ দশমিক ৫০ ডলার নির্ধারণ করতে চিঠি দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারকদের ভাষ্য ছিল, গত চার মাসে দুবার পাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়িয়েছে কাস্টমস। এতে আমদানিকারকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দাবি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।

এদিকে ২৩ দিন বন্ধ থাকার কারণে লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে গত ১৪ জানুয়ারি সিলেটের বিভিন্ন স্থলবন্দর এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। এমন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে সিলেটের কাস্টমস কার্যালয়ে কাস্টমস কর্মকর্তা ও আমদানিকারকদের বৈঠক হয়। বৈঠকে পাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১ দশমিক ২৫ ডলার এবং চুনাপাথর আমদানিতে ৭৫ সেন্ট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাবেক সভাপতি মো. এমদাদ হোসেন, সিলেট জেলা পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি ও সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি মো. আতিক হোসেন, অর্থ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্ত্তী, তামাবিল পাথর, চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. লিয়াকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন, ভোলাগঞ্জ পাথর আমদানিকারক গ্রুপের সহসভাপতি মো. বশির আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রমুখ।

তামাবিল পাথর, চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার বেলা ১১টার দিকে তামাবিল স্থলবন্দরসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়েছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে বৈঠকের পর নির্ধারিত শুল্ক থেকে কমানোর পর পাথর ব্যবসায়ীরা আমদানিতে রাজি হয়েছেন। তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০টি ট্রাকে করে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি হয়।