বাউফলে ১১ বছর আগে যুবদল নেতা হত্যার পুনঃ তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন

পটুয়াখালীর বাউফলে ১১ বছর আগে যুবদল নেতা মশিউর রহমান ওরফে খোকনকে হত্যার ঘটনায় পুনঃতদন্তের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন। মঙ্গলবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর বাউফলে মশিউর রহমান ওরফে খোকন (৩২) নামে যুবদলের এক নেতাকে খুন করে মাটিচাপা দিয়ে লাশ গুমের ঘটনায় পুনঃ তদন্ত ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার কালাইয়া-বড় ডালিমা সেতুসংলগ্ন সড়কে প্রথমে মানববন্ধন এবং পরে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

নিহত মশিউর রহমান নাজিরপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামের রমিজ উদ্দিনের ছেলে।

মশিউরের বড় ভাই মিজানুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে কালাইয়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে মশিউর নিখোঁজ হন। ১৪ নভেম্বর সকালে তাঁদের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার পশ্চিমে একটি পরিত্যক্ত ভিটায় মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তাঁর ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় ওই বছরের ১৪ নভেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন খান, সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ভাতিজা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে মনির মোল্লা এবং তাঁর ভাই চন্দ্রদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক ওরফে আলকাচ মোল্লা একটি অজ্ঞাতনামা আসামি করে এজাহার লিখে তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই এজাহারে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন। তদন্তে প্রভাবশালী ওই মহলের চাপে প্রকৃত খুনিদের নাম বাদ দিয়ে তিন ব্যক্তির নামে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যাঁর মধ্যে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন। এ কারণে তাঁর ভাইয়ের হত্যার ঘটনার পুনঃ তদন্তের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান মিজানুর।

মিজানুর দাবি করেন, তাঁর ভাইকে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা পরিকল্পিতভাবে খুন করেছেন। ওই খুনিরাই তাঁর চাচাতো ভাই কামাল হোসেনের দুই চোখ উপড়ে ফেলেছেন বলে তিনি জানান।

মানববন্ধনে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন ইউপি সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন। ফারুক হোসেন বলেন, তাঁকে মশিউর রহমান খুনের অভিযোগপত্র সাক্ষী করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মহলের চাপে প্রকৃত খুনিদের বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র দেওয়ায় তিনি সাক্ষ্য দেননি। মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

এদিকে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মোশারেফ হোসেন, যুবলীগ নেতা ফয়সাল আহম্মেদ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এনামুল হক ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।