বরিশালে সাদিক আবদুল্লাহর পোড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার ৩ লাশের মধ্যে দুজনের পরিচয় শনাক্ত
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাড়ি থেকে উদ্ধার পুড়ে যাওয়া তিনটি লাশের মধ্যে দুজনের পরিচয় শনাক্ত করেছেন স্বজনেরা।
একটি মরদেহ নগরের নাজির মহল্লা এলাকার কাঞ্চন ফরাজির ছেলে নুর ইসলাম ওরফে নুরুর (৪৫) বলে জানিয়েছেন, তাঁর ছোট ভাই রানা ইসলাম। আরেকটি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি এলাকার মজিবুর রহমান জমাদ্দারের ছেলে মঈন জমাদ্দারের (৪৫) বলে জানিয়েছেন তাঁর চাচা আনোয়ার হোসেন জমাদ্দার। তাঁরা দুজনই যুবলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অন্য মরদেহটি নগরের শীতলাখোলা এলাকার প্রশান্ত নামে এক যুবকের হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাঁর লাশ শনাক্ত করতে কেউ মর্গে না আসায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গতকাল সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বরিশালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিজয়োল্লাস শুরু করেন। তখন আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিকেলে নগরের কালীবাড়ি রোডে সাদিক আবদুল্লাহর পৈতৃক ওই বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। এতে দোতলা বাড়িটির বেশির ভাগ পুড়ে গেছে। আগুন নিভে যাওয়ার পর বাড়ির দোতলার একটি কক্ষে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তিনজনের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে রাতে ওই তিনজনের লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল করেজের মর্গে পাঠানো হয়। আগুনে পুড়ে তিনজনের চেহারা বিকৃত হয়ে যাওয়ায় প্রথমে মরদেহগুলো শনাক্ত করা যায়নি।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. বেলাল উদ্দীন সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাদিক আবদুল্লাহর বাড়িতে যান। সেখান থেকে তাঁরা তিনটি লাশ উদ্ধার করেন। লাশগুলো শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুড়ে যাওয়ায় তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বেলা ৩টার দিকে কয়েক শ লোক ওই বাড়ির চারপাশে ঘিরে হামলা চালায়। এ সময়ে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তখন সাদিক আবদুল্লাহ ওই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন বলেই অনেকে দাবি করেন। যদিও অগ্নিসংযোগের পর বাড়ি থেকে সাদিক আবদুল্লাহসহ অনুসারীরা বাড়ি থেকে বের হতে পেরেছেন বলে নিশ্চিত করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।